বিদেশিহীন ডেম্পোকেও হারাতে পারল না ছয় বিদেশি নিয়ে খেলা ইস্টবেঙ্গল, সুপার কাপের শুরুতেই আটকে গেল লাল-হলুদ
আনন্দবাজার | ২৫ অক্টোবর ২০২৫
আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে হার এবং সন্দীপ নন্দী ও অস্কার ব্রুজ়োর ঝামেলা কি প্রভাব ফেলেছে ইস্টবেঙ্গলে? না হলে সুপার কাপের প্রথম ম্যাচেই কী ভাবে আটকে গেল ইস্টবেঙ্গল? বিদেশি না-থাকা ডেম্পোর বিরুদ্ধে পিছিয়ে পড়ার পর এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ড্র করল তারা। ম্যাচ শেষ হল ২-২ ব্যবধানে।
গ্রুপ থেকে একটি দলই সেমিফাইনালে উঠবে। ফলে ইস্টবেঙ্গলের কাছে এই ড্র নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা। মোহনবাগান যদি এ দিন চেন্নাইয়িনকে হারিয়ে দেয় এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ডেম্পোকেও হারায়, তা হলে অনেকটা এগিয়ে থেকে কলকাতা ডার্বিতে নামবে তারা।
ডেম্পোকে যে হালকা ভাবে নিতে চাননি এটা বোঝা গিয়েছিল অস্কার ব্রুজ়োর প্রথম একাদশ দেখেই। পাঁচ বিদেশিকে নিয়ে শুরু করেন তিনি। সেন্টার ব্যাকে আনোয়ার আলি এবং কেভিন সিবিলেকে রাখেন। মাঝমাঠে মহম্মদ রশিদ এবং সাউল ক্রেসপোকে দিয়ে শুরু করেন। শুরুতেই সুযোগ এসেছিল ইস্টবেঙ্গলের কাছে। বাঁ দিক থেকে বিপিন সিংহ বল ভাসিয়েছিলেন। তা আসে হিরোশি ইবুসুকির কাছে। ইবুসুকির জোরালো শট লাগে বারে।
সময় এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণের ঝাঁজও বাড়তে থাকে ইস্টবেঙ্গলের। কিন্তু গোল পাচ্ছিল না তারা। আক্রমণ হচ্ছিল মূলত বাঁ দিকে বিপিনের থেকে। তিনি একের পর এক ক্রস ভাসাচ্ছিলেন। তা ক্লিয়ার করে দিচ্ছিল ডেম্পোর রক্ষণ। খেলার বিপরীতেই এগিয়ে যায় গোয়ার দলটি। ইস্টবেঙ্গল গোল খায় দেবজিৎ মজুমদারের ভুলে। ফ্রিকিক থেকে বল ভেসে এসেছিল ইস্টবেঙ্গলের বক্সে। দেবজিৎ এগিয়ে এসে বলটি ঘুষি মেরে ক্লিয়ার করতে গিয়েছিলেন। বলের সঙ্গে হাতের সংযোগই হয়নি। বল গিয়ে পড়ে মহম্মদ আলির কাছে, যিনি ফাঁকা গোলে বল ঠেলেন।
আক্রমণাত্মক খেলেও আচমকা গোল খেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল। সেই সুযোগ আক্রমণ বাড়িয়ে দেয় ডেম্পো। তাদের আত্মবিশ্বাস তখন তুঙ্গে। ইস্টবেঙ্গলের উপর চাপ বাড়াতে থাকে তারা। ফলে লাল-হলুদেরও খেলতে সমস্যা হচ্ছিল। ইবুসুকি আর একটি সুযোগ পেলেও ডেম্পোর গোলকিপারের দক্ষতায় গোল আসেনি। প্রথমার্ধে সমতা ফেরাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল করে তারা। সমতা ফেরান মহেশ। ডান দিক থেকে আক্রমণ শুরু করেছিল ইস্টবেঙ্গল। হামিদ আহদাদ দূর থেকে শট নিয়েছিলেন। ডেম্পোর গোলকিপার তা প্রতিহত করলে বল গিয়ে পড়ে মহেশের কাছে। তিনি নিচু শটে গোল করেন।
গোল পেয়েই আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়ে দেয় ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় ৫৭ মিনিটে। বাঁ প্রান্ত ধরে ডেম্পোর বক্সের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন মিগুয়েল। তাঁকে উঁচু করে পাস দেন লালচুংনুঙ্গা। সেই বল ধরে দুরূহ কোণ থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে গোল করেন মিগুয়েল। ছ’মিনিট পরেই তাঁর শট লাগে পোস্টে। ছোট কর্নার থেকে মহেশকে বল পাস দিয়েছিলেন মিগুয়েল। ফিরতি বল পেয়ে তিনি বাঁকানো শট নেন। তা লাগে বারে।
এক গোলে এগিয়ে থাকলেও তা কখনওই নিরাপদ নয়। তাই আরও গোলের জন্য আক্রমণ বাড়াতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। প্রতি আক্রমণে গোল তুলে নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে তারা। হামিদকে তুলে ডেভিড লালানসাঙ্গাকে নামিয়ে দেন অস্কার। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে গোল হজম করে ইস্টবেঙ্গল। বক্সের বাইরে বল পেয়েছিলেন জয়েশ রানে। ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ ভাগকে বোকা বানিয়ে নিচু শটে গোল করেন তিনি। কিছু করার ছিল না দেবজিতের। সংযুক্তি সময় ছ’মিনিট দেওয়া হলেও ইস্টবেঙ্গল আর গোল করতে পারেনি।