• ছ’মাসে সাইবার জালিয়াতির শিকার ৩০ হাজার, গায়েব দেড় হাজার কোটি
    বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি:  সাইবার ঠগদের দৌরাত্ম্য অব্যাহত। শুধুমাত্র গত ছ’মাসেই দেশে বিনিয়োগের টোপে আর্থিক প্রতারণার শিকার ৩০ হাজার জনেরও বেশি। এরমাধ্যমে মোট দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকরা। তাদের টার্গেট মূলত ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সের লোকজন। এধরনের প্রতারণায় সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বেঙ্গালুরু, দিল্লি-এনসিআর ও হায়দরাবাদের বাসিন্দারা। এই তিন অঞ্চলেই ঘটেছে ৬৫ শতাংশ প্রতারণার ঘটনা। সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্টে এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাইবার শাখা। সাইবার প্রতারণার পাশাপাশি দেশে ডিজিটাল অ্যারেস্টের ঘটনাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।  ইতিমধ্যে এবিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা দায়ের করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামীকাল সোমবার মামলার শুনানি হবে বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে।  

    ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের রিপোর্ট অনুযায়ী, সবথেকে বেশি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দারা। লগ্নিতে বিপুল লাভের টোপ দিয়ে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকরা। জানা গিয়েছে, প্রতারিতদের মধ্যে ৭৬ শতাংশের বয়স ৩০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। বাদ যাচ্ছেন না প্রবীণ নাগরিকরা। এক্ষেত্রে প্রায় ২ হাজার ৮২৯ প্রবীণ প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়েছেন। রিপোর্ট বলছে, প্রতারিত ব্যক্তিরা গড়ে প্রায় ৫২ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। রাজধানী দিল্লিতে মাথাপিছু ৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকরা। কীভাবে চলে প্রতারণার কারবার? তথ্য অনুযায়ী, মূলত বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ও মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করা হয়। ২০ শতাংশ ঘটনায় হোয়াটসঅ্যাপ বা টেলিগ্রামের সাহায্যে শিকার ধরেছে প্রতারকরা। নির্দিষ্ট গ্রুপ বানিয়ে শুরু হয় অপারেশন। 

    ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে প্রতারণার ঘটনাও বাড়ছে। সম্প্রতি ডিজিটাল অ্যারেস্টের ফাঁদে ফেলে আম্বালার এক বৃদ্ধ দম্পতির কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকরা। জীবনের সমস্ত সঞ্চয় খুইয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা দায়ের হয়। গত ১৭ অক্টোবর মামলার শুনানিতে  ডিজিটাল অ্যারেস্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। এই সাইবার অপরাধ রুখতে কেন্দ্র ও রাজ্যকে যৌথভাবে কাজ করার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। পর্যবেক্ষণে বলা হয় ‘প্রতারকরা সুপ্রিম কোর্টের নামে আদালতের নির্দেশ সহ একাধিক নথি জাল করেছে। এই ধরনের অপকর্ম আমাদের প্রতিষ্ঠানের সম্মান ও মর্যাদার উপর সরাসরি আঘাত। তাই এগুলিকে সাইবার প্রতারণার সাধারণ ঘটনা হিসেবে কখনই দেখা যায় না।’
  • Link to this news (বর্তমান)