কুর্নুলে বাসের আগুন ভয়াবহ করে তোলে ২৩৪টি স্মার্টফোন, তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য
বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
অমরাবতী: বাইকের সঙ্গে সংঘর্ষে বাসে আগুন ধরে গিয়েছিল। আর তাতে যেন ঘৃতাহুতি দেয় বাসে থাকা ২৩৪টি স্মার্টফোনের ব্যাটারির বিস্ফোরণ। অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুলে বাস দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। এই দুর্ঘটনায় ঝলসে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বাসে থাকা স্মার্টফোনের একটা প্যাকেট বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। প্যাকেটে ছিল ২৩৪টি স্মার্টফোন। এগুলির মোট দাম ৪৬ লক্ষ টাকা। এই স্মার্টফোনগুলির ব্যাটারির একের পর এক বিস্ফোরণে আগুন আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠে। নিমেষে আগুনের গ্রাসে চলে যায় গোটা বাস। যাত্রীদের বেশিরভাগই বাইরে বেরিয়ে আসার ন্যূনতম সময়টুকু পাননি।
তদন্তে জানা গিয়েছে, হায়দরাবাদের এক ব্যবসায়ী বেঙ্গালুরুর একটি ই-কমার্স কোম্পানিকে সেই স্মার্টফোনের পার্সেলটি পাঠিয়েছিলেন। ফোনগুলির ব্যাটারি ফেটে যাওয়ায় মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এখানেই শেষ নয়। ওই এসি বাসের বৈদ্যুতিক ব্যাটারিগুলিরও বিস্ফোরণ হয়। দমকলের এক আধিকারিক জানান, আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে বাসের মেঝের অ্যালুমিনিয়াম শিট পর্যন্ত গলে গিয়েছে।
এরইমাঝে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগে মদ্যপ অবস্থায় পেট্রল পাম্প থেকে বাইক নিয়ে বেরতে দেখা গিয়েছে শিবশঙ্কর নামে এক যুবককে। বাইকে স্টার্ট দিতে গিয়েই টাল সামলাতে পারছিলেন না তিনি। পরে জাতীয় সড়কে শিবশঙ্করের বাইকের সঙ্গে অভিশপ্ত বাসের ধাক্কা লাগে। বাইকটিকে প্রায় ২০০ মিটার পর্যন্ত হিঁচড়ে নিয়ে যায় বাসটি। জানা গিয়েছে, রাত ২টা ২৩ মিনিটে শিবশঙ্কর তাঁর এক সঙ্গীকে নিয়ে পেট্রোল পাম্পে পৌঁছন। পরে টলতে টলতে বাইক নিয়ে একাই বেরিয়ে যান। বাইক চালকের ওই সঙ্গীকে হেপাজতে নিয়েছে পুলিশ।
পুরো ঘটনায় বাস চালকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আহত যাত্রীদের কথায়, আগুন লাগার পরই বাসের স্বয়ংক্রিয় দরজা বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীরা জানালার কাচ ভেঙে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। অনেকে চালকের খোঁজে সামনের দিকে এগিয়ে যান। সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু বিপদ বুঝে আগেভাগেই বাস থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যান চালক। এক্ষেত্রে পরিত্রাতা হয়ে ওঠেন সহ চালক। ইতিমধ্যেই বাসের প্রধান চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সহ চালককেও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।