বিহারে ত্রিশঙ্কুর সম্ভাবনা, মহারাষ্ট্রের কায়দায় অপারেশন লোটাসের প্রস্তুতি শুরু বিজেপির!
বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: বিহারে ত্রিশঙ্কু বিধানসভার সম্ভাবনা প্রবল। এই আলোচনাই তুঙ্গে। আর তাতেই উসকে গিয়েছে ‘অপারেশন লোটাসে’র জল্পনা। বিজেপি জোট যদি ম্যাজিক সংখ্যা পাওয়ার কমবেশি ১৫ আসন আগেই থেমে যায়, তাহলে ‘অপারেশন লোটাস’ অবশ্যম্ভাবী। ত্রিশঙ্কু বিধানসভার আশঙ্কা অবশ্য একা এনডিএ করছে না, আরজেডি তথা বিরোধী মহাজোটও আতঙ্কে। বরং তাদের শঙ্কা আরও বেশি—বিধায়কদের ধরে রাখা যাবে তো? কারণ, একের পর এক রাজ্যে দেখা গিয়েছে এই মডেল। বিহারের নির্বাচনী প্রচার চলাকালীনই প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, ‘সরকার গঠনের জন্য বিজেপির গরিষ্ঠতা পাওয়ার দরকার হয় না। ওটা অন্য দলের চিন্তা। বিজেপি শুধু চেষ্টা করে গরিষ্ঠতার কাছাকাছি পৌঁছতে। বাকিটা তাদের কাছে সহজ।’ কয়েক সপ্তাহ আগেই দিল্লিতে বিজেপি সাধারণ সম্পাদক তথা বিহারের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিনোদ তাওড়ের বাসভবনে নীতীশ কুমারের রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বকে নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। তারপর থেকেই জল্পনা তুঙ্গে যে, ‘অপারেশন লোটাসে’র প্রস্তুতি শুরু করে ফেলেছে গেরুয়া শিবির!
শুধু যে পরস্পরবিরোধী নয়, রীতিমতো বিস্ময়কর কিছু কিছু জনমত সমীক্ষা দেখা যাচ্ছে বিহারের নির্বাচনকে ঘিরে। সি ভোটার বলেছে, এনডিএ-র পক্ষে ৪০ শতাংশ মানুষ ভোট দিতে পারে। আবার তাদের সমীক্ষাতেই বলা হয়েছে, বিহারের সবথেকে বেশি সংখ্যক মানুষ তেজস্বী যাদবকে চাইছে মুখ্যমন্ত্রী পদে! ৩৬ শতাংশ। তাদের মতে দ্বিতীয় পছন্দের মুখ্যমন্ত্রী প্রশান্ত কিশোর। ২৩ শতাংশ তাঁর পক্ষে। কোনও সমীক্ষা বলেছে, ১৭৭ পেয়ে একক গরিষ্ঠতা ছাড়িয়ে শিখরে পৌঁছে যাবে বিজেপি জোট। তাবৎ সমীক্ষাকে বিশ্লেষণ করে যা মনে করা হচ্ছে, সেটি হল, বিহারে এবার কোনও দল অথবা জোটই পাবে না একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা। অর্থাৎ, ত্রিশঙ্কু বিধানসভা! ক্রমেই বিহারের রাজনৈতিক মহলের মধ্যে এই ভাবনা তথা অনুমানের প্রতিফলন স্পষ্ট হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোট ২৪৩ আসনের মধ্যে ১২২ ম্যাজিক সংখ্যা কোনও জোটই সম্ভবত স্পর্শ করতে পারবে না। সবথেকে বেশি যে আলোচনা চলছে এনডিএ-র একক বৃহত্তম আসন পাবে। কিন্তু ১১০ আসনের বেশি পেরতে পারবে না। পক্ষান্তরে, ১০৩ আসনের মধ্যেই থেকে যাবে ইন্ডিয়া জোটের জয়রথ। দু’পক্ষের প্রাপ্ত ভোটশতাংশে সামান্য পার্থক্য হবে।
এবার বিজেপি জোটের জন্য সুসংবাদ এবং দুঃসংবাদ দু’টিই আছে। সুসংবাদ হল, পাঁচ বছর আগে চিরাগ পাসোয়ান ছিলেন না এনডিএতে। ২৮টি আসনে ভোট কেটে নিয়ে তিনি প্রভূত ক্ষতি করেছিলেন। আবার দুঃসংবাদ হল, এবার ময়দানে আগমন ঘটেছে নতুন দলের। প্রশান্ত কিশোরের জনসুরাজ পার্টি। বিজেপি ও আরজেডি, উভয় জোটের জন্যই শঙ্কার কারণ হল, প্রতিটি জনমত সমীক্ষাই বলেছে যে, প্রশান্ত কিশোরের দল ৮ থেকে ১৩ শতাংশ ভোট পাবে। এবং ৬ থেকে ২৪ আসনও পেতে পারেন। তাহলে কি পিকে প্রথমবার রাজনীতির ময়দানে এসেও হতে চলেছেন কিং মেকার?