• বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল, বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা জানতে রিপোর্ট তলব
    বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বোলপুর: কঠিন ও তরল বর্জ্য নিষ্কাশনে কী ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্বভারতী, তা জানতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। এনিয়ে বিশ্বভারতীর পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কাছ থেকেও রিপোর্ট তলব করেছে পরিবেশ আদালত। মূলত পৌষমেলা যাতে ‘পরিবেশবান্ধব’ হয়, সেই কারণেই আদালতের এই অতি সক্রিয়তা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বিশ্বভারতী সূত্রের দাবি, এবছর পরিবেশবান্ধব মেলা করতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

    শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলায় দূষণের অভিযোগ নতুন নয়। মেলার ভিড়ের চাপে কঠিন ও তরল বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে। এনিয়ে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সুভাষবাবু জানান, শুধুমাত্র পৌষমেলায় দূষণই নয়, বিশ্বভারতীর অন্দরেও কঠিন ও তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের কোনও ব্যবস্থা নেই। এরফলে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। তাঁর করা মামলায় আদালত এনিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে। ২০২০ সালের এই মামলার রায়ে জাতীয় পরিবেশ আদালত নির্দেশ দেয়, কঠিন ও তরল বর্জ্য নিষ্কাশনে বিশ্বভারতীকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। আইন মেনে যা যা করার করতে হবে। পরিবেশবান্ধব পৌষ মেলা করতে হবে। 

    যদিও সূত্রের খবর, আদালতের নির্দেশ না মানার কারণে পুনরায় মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আদালত নির্দেশ দেয়, কঠিন তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের যাবতীয় কাজ ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ করতে হবে। ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি এনিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা করতে হবে। অভিযোগ, আদালতের এই নির্দেশের পরও বর্জ্য নিষ্কাশনে কী পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্বভারতী, সে ব্যাপারে কোনও রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি তারা। সেকারণে ফের এনিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। গত ১৫ অক্টোবর একটি রায়ে আগামী দু’মাসের মধ্যে এনিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে। আগামী ২২ ডিসেম্বর, পৌষমেলার প্রাক্কালে এই মামলার শুনানি রয়েছে। এর প্রভাব পৌষমেলায় পড়বে কি না, সেটাই এখন দেখার। 

    বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, পৌষমেলায় দূষণ নিয়ন্ত্রণে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেব্যাপারে রিপোর্ট আমরা জেলা প্রশাসনকে দিই। এবার আদালত স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে জানতে চেয়েছে। আমরা রিপোর্ট জমা দেব। আদালতকে অশ্বস্ত করব। পরিবেশবান্ধব মেলা করতে আমরাও বদ্ধপরিকর। মেলা সংক্রান্ত জাতীয় পরিবেশ আদালতের যা নির্দেশ রয়েছে আমরা তা মেনে চলব। পরিবেশবিদ সুভাষবাবু বলেন, গ্রিন ট্রাইব্যুনাল নিশ্চয়ই সঠিক রিপোর্ট পায়নি। তাই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে। বিশ্বভারতী ও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে চূড়ান্ত রিপোর্ট তলব করেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)