চারচাকা গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু বাবা ও ছেলের, জখম এক, শোকের ছায়া তারাপীঠের রামভদ্রপুর গ্রামে
বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: শ্রাদ্ধবাড়ি থেকে ফেরার পথে দ্রুতগামী চারচাকা গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল এক বাইক আরোহী ও তাঁর নাবালক ছেলের। অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন বাইকে থাকা আরও এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে তারাপীঠ থানার ধল্লা গ্রামে যাওয়ার রাস্তার পলাশী মোড়ের কাছে। ঘটনায় পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম অপূর্ব মাল (৩৮) ও তাঁর বছর বারোর ছেলে তুফান মাল। বাড়ি তারাপীঠ থানার রামভদ্রপুর গ্রামে। অপূর্ব চাষাবাদের পাশাপাশি গ্রামেই একটি পোল্ট্রি ফার্ম চালাতেন। তুফান ধল্লা হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। শুক্রবার দুপুরে অপূর্ব তাঁর ছেলে তুফান ও এক বন্ধু প্রসেনজিৎ মালকে বাইকে চাপিয়ে ধল্লা গ্রামের এক শ্রাদ্ধবাড়িতে আসেন। সেখানে খাওয়াদাওয়া সেরে বিকেলে তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ে পলাশী গ্রামের মোড়ের কাছে সামনের দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি চারচাকা গাড়ি বাইকটিকে ধাক্কা মেরে চলে যায়। রাস্তার এদিকে ওদিকে ছিটকে পড়েন তিনজন। স্থানীয়রা তাঁদের রক্তাক্ত ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করেন। চিকিৎসক তুফানকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। এরই মধ্যে রাতের দিকে মৃত্যু হয় অপূর্বর। পরে রাত দেড়টা নাগাদ বর্ধমান মেডিকেলে মৃত্যু হয় তুফানের। গুরুতর আহত অবস্থায় রামপুরহাট মেডিকেলে চিকিৎসাধীন প্রসেনজিৎ। তিনি কোমরে আঘাত পেয়েছেন। মৃত অপূর্বর ভাগনে গৌরব মাল বলেন, মামার দুই মেয়ে আর একমাত্র পুত্র তুফান। পরিবারের সকলের আদরের ছিল সে। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল।
এদিন রামপুরহাট ও বর্ধমান মেডিকেলের মর্গ থেকে ময়নাতদন্তের পর বাবা ও ছেলের দেহ গ্রামে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয়স্বজনরা। প্রচুর মানুষ সেখানে ভিড় জমান। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় স্বামী ও আদরের ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন অপূর্বর স্ত্রী ললিতা মাল।
স্থানীয়রা বলেন, ভাইফোঁটার দিন ওরা ভাইবোনেরা কতই না আনন্দ করছিল। কিন্তু একদিন যেতে না যেতেই সেই আনন্দকে ছাপিয়ে শোক নেমে এল ওই পরিবারে। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলের কাছে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। তবে কিছুটা দূরে ক্যামেরা রয়েছে। সেই ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে ঘাতক গাড়িটির খোঁজ চলছে।