চন্দ্রমুখীর নামে বিক্রি হচ্ছে অন্য প্রজাতির আলু পার্থক্য নজরে পড়ছে না ক্রেতা থেকে ব্যবসায়ীদের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
বাজারে চন্দ্রমুখীর নাম করে বিক্রি হচ্ছে সংকর প্রজাতির অন্য আলু। খাঁটি চন্দ্রমুখী আলু কোনটি, দ্বন্দ্বে ক্রেতা থেকে ব্যবসায়ীরা। অনুমান, হিমালিনী অথবা কলম্বো নামের দুই সংকর প্রজাতির আলুকে চন্দ্রমুখী আলু বলে বিক্রি করা হচ্ছে নানা জায়গায়। অনুমান, চাহিদা বেশি কিন্তু জোগান কম থাকার ফলে চন্দ্রমুখীর নামে অন্য প্রজাতির আলু বিক্রি করা হচ্ছে।
হিমঘর মালিক থেকে খুচরো বিক্রেতা সকলেরই বক্তব্য, সব জায়গায় যে খাঁটি চন্দ্রমুখী বিক্রি হচ্ছে তা নয়। অনেক ক্ষেত্রে হিমালিনী বা কলম্বোর সঙ্গে অল্প পরিমাণে চন্দ্রমুখী মিশিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। আবার কোথাও সম্পূর্ণ হাইব্রিড আলুই বিক্রি হচ্ছে চন্দ্রমুখীর দরে। কারণ, বাইরের চেহারায় এই আলুগুলির মধ্যে পার্থক্য বোঝা প্রায় অসম্ভব। খাওয়ার সময় স্বাদে কিছু পার্থক্য ধরা পড়লেও তা অনেকেরই নজরে আসে না
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির কর্তা লালু মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘হিমঘর থেকে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৪-১৫ টাকায়, চন্দ্রমুখী প্রায় ২০ টাকায়। সেই হিসাবে খাঁটি চন্দ্রমুখীর খুচরো দাম ২৫ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। কিন্তু বাজারে ২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এমন আলু, যার মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই আসল চন্দ্রমুখী নেই।’ হিমঘর মালিক সংগঠনের কর্তা পতিতপাবন দে জানান, রাজ্যের মোট আলু উৎপাদনের মাত্র পাঁচ শতাংশই চন্দ্রমুখী।
মূলত হুগলির তারকেশ্বর, ধনেখালি ও পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর, মেমারিতে এই জাতের আলুর চাষ হয়। ফলে জোগান কম থাকায় দামও বেশি। অন্যদিকে, হিমালিনী ও কলম্বো জাতের আলু চাষে খরচ কম, ফলন বেশি। তাই অনেক কৃষক এখন এই দুই প্রজাতির আলুর চাষে ঝুঁকছেন। বিশেষত কলম্বো আলুর রঙ, আকার ও গঠন চন্দ্রমুখীর সঙ্গে প্রায় এক, ফলে অনেকেই সহজেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই কলম্বো জাতের বীজ পাঞ্জাব থেকে আসে। যা দ্রুত বাজার দখল করছে।
ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির দাবি, বাজারে আলু যেন তার আসল নামেই বিক্রি হয়, যাতে ক্রেতা নিজের মতো বেছে নিতে পারেন। খাদ্যসামগ্রী বিষয়ক রাজ্য টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, ‘চন্দ্রমুখী নিয়ে বিশেষ নজরদারি থাকে না, কারণ বেশিরভাগ ক্রেতাই কম দামের জ্যোতি আলুই কেনেন। তবে এখন ভেজাল বিক্রির প্রবণতা বাড়ায় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।’