ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ অদলবদল! চাঞ্চল্য, তদন্তে পুলিশ
বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্তের পর আলিপুরদুয়ারে মৃতদেহ অদলবদল। আর তাতেই ঘটল চরম বিপত্তি। ঘটনাটি প্রথমে প্রকাশ্যে আসে কামাখ্যাগুড়ির সুপার মার্কেট এলাকায়। গতকাল, শনিবার সকালে ওই এলাকার বাসিন্দা রবীন্দ্র দাসের(৪৫) ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় শামুকতলা থানার তেঁতুলতলার একটি ধাবা থেকে। ওই ধাবাতেই তিনি কাজ করেন। পুলিশ যথারীতি রবীন্দ্র দাসের দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পাঠায়। সন্ধ্যায় বাড়িতে দেহ আসার পর শোরগোল পড়ে যায়। পরিবারের দাবি, সেটি রবীন্দ্র দাসের মৃতদেহ নয়। বিভ্রান্তিতে পড়ে যায় পুলিশ। এদিকে, গতকালই, সকালে ফালাকাটার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে রান্নাঘর থেকে গণেশ দাস নামের এক ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গণেশ দাসেরও বয়স ৪৫ বছর। পুলিশ যথারীতি ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালে পাঠায় তাঁর দেহ। মৃত গণেশবাবুর স্ত্রী মারা গিয়েছেন অনেক আগেই। তাঁর দুই শিশু সন্তান একটি হোমে থাকত। ফলে পেশায় দিন মজুর গণেশ দাস একাই বাড়িতে থাকতেন। গণেশবাবুর ছোট ভাই কার্তিক দাস ময়নাতদন্তের জন্য দাদার দেহ নিয়ে জেলা হাসপাতালে যান। কিন্তু লোকবল সঙ্গে বেশি না থাকায় কার্তিকবাবু তাঁর দাদার দেহ আর ফালাকাটায় ফিরিয়ে নিয়ে আসেন নি। তিনি দাদার দেহ আলিপুরদুয়ার জেলা শহরের শোভাগঞ্জের শ্মশানে দাহ করে চলে আসেন। এদিকে, এই বিপত্তি হওয়ায় সন্ধ্যায় কামাখ্যাগুড়ি সুপার মার্কেট এলাকায় পাঠানো দেহটি পুলিশ ফের হাসপাতালের মর্গে ফিরিয়ে আনে। ততক্ষণে শোভাগঞ্জ শ্মশানে রবীন্দ্র দাসের দেহ দাহ হয়ে গিয়েছে। মৃত রবীন্দ্র দাসের ছেলে খোকন দাস বলেন, হাসপাতাল থেকে যে দেহ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে সেটি আমার বাবার নয়। অন্য কোনও ব্যক্তির। আমি আমার বাবার দেহ ফেরত চাই। শেষ পর্যন্ত পুলিশ রবীন্দ্র দাসের বাড়ির লোককে বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। অন্যদিকে, মৃত গণেশ দাসের ভাই কার্তিক দাস বলেন, আমাদের লোকবল নেই। তাই দাদার দেহ ভেবে মৃতদেহ দাহ করি। হাসপাতালের মর্গ থেকে সেভাবেই আমাদের দেহ দেওয়া হয়েছিল। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার পরিতোষ মণ্ডল বলেন, এই ঘটনায় এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ঘটনার তদন্ত হবে। পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, স্পর্শকাতর ঘটনা। যেখানেই ঘটুক গাফিলতি হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।