অয়ন ঘোষাল: দীপাবলি-ভাইফোঁটা (Diwali Utsav) কাটতে না কাটতেই 'ঝড় আসছে, ঝড় আসছে'-- রবে ফের তৈরি হয়েছে উদ্বেগের আবহাওয়া। গত দু'দিন ধরেই সাইক্লোন মান্থা নিয়ে (cyclone Mantha Updates) খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছেন মানুষ। কোথায় আসছে, কতটা ভয়ংকর হবে এই ঝড়-- ইত্যাদি নিয়ে সাধারণের আগ্রহ এখন তুঙ্গে। সেই আবহেই এসে গেল রবিসকালের আবহাওয়া-সংবাদ। কী কী জানা গেল? জগদ্ধাত্রী পুজোয় দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। আজ, রবিবার উত্তরবঙ্গে হালকা বৃষ্টি। দক্ষিণবঙ্গে আগামী সপ্তাহে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা।
দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত
দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত আজ, রবিবার ভোরে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম এবং মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড়টির অভিমুখ থাকবে পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম দিক। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে মান্থা। এই নাম দিয়েছে থাইল্যান্ড। এর অর্থ-- 'সমুদ্র মন্থন'।
মঙ্গলসন্ধ্যায়
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ল্যান্ডফল করবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থা। এটি ল্যান্ডফল করবে অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়ায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারতীয় সময় আনুমানিক ৭টা নাগাদ স্থলভাগে প্রবেশের প্রবল সম্ভাবনা এর। ল্যান্ডফলের সময় গতিবেগ সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। ল্যান্ড ফলের দিন, ২৮ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল থেকেই সমুদ্র উত্তাল হতে শুরু করবে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ২৭ তারিখ বিকেলের মধ্যে উপকূলে ফিরে আসতে পরামর্শ।
ল্যান্ডফল
২৮ অক্টোবর সন্ধ্যে থেকে রাতের মধ্যে যে কোনো সময়ে অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া এবং মছলিপত্তনম উপকূলের মধ্যে কোনো একটি জায়গায় ল্যান্ডফল হবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থার। ল্যান্ডফলের সময় এর সম্ভাব্য সর্বোচ্চ গতিবেগ ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
উত্তরবঙ্গে
উত্তরবঙ্গে রবিবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির আশঙ্কা বাড়বে। মেঘলা আকাশ বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস। দার্জিলিং কালিম্পং জলপাইগুড়ি আলিপুরদুয়ার জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। আগামীকাল সোমবার থেকে বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা কমবে উত্তরবঙ্গে। পশ্চিমি ঝঞ্ঝা চলে যেতেই উত্তরবঙ্গে শুরু হয়ে যাবে শুষ্ক আবহাওয়া। দুদিন এরকম আবহাওয়া থাকার পর ফের হওয়াবদল উত্তরবঙ্গে। বৃহস্পতি ও শুক্রবারে উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা। ভারী বৃষ্টি মালদা উত্তর দিনাজপুর এবং আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে।
দক্ষিণবঙ্গে
দক্ষিণবঙ্গে আজ, রবিবার মূলত শুষ্ক হাওয়া। আংশিক মেঘলা আকাশ। উপকূলের কাছাকাছি জেলায় বিকেলের পর আবহাওয়ার পরিবর্তন। সম্পূর্ণ মেঘলা আকাশ। আগামীকাল, সোমবার উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস। সোমবার রাতে ছট পুজোর সূর্যাস্ত প্রণাম এবং মঙ্গলবার সকালে ছট পুজোর সূর্য নিবেদনের দিন হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। পরশু মঙ্গলবার বিকেল থেকে বৃষ্টি বাড়বে দক্ষিণবঙ্গে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। বৃষ্টির সঙ্গে উপকূলের ও উপকূল-সংলগ্ন জেলাগুলিতে ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাস বইতে পারে। উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা কলকাতা হাওড়া হুগলি পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় বৃষ্টি। বুধবার হাওড়া উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম-- এই ছয় জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। সেদিনও বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতায়। বৃহস্পতিবারেও ভারী বৃষ্টি। বীরভূম পশ্চিম বর্ধমান নদীয়া ও মুর্শিদাবাদে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা।
আবহাওয়া দফতরের পরামর্শ
দক্ষিণবঙ্গের কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে-- মাঠে পাকা ফসল থাকলে তা সোমবারের মধ্যেই কেটে তুলে নিন। জানানো হয়েছে, ঝড়বৃষ্টির জেরে নীচু এলাকায় জল জমতে পারে। ওদিকে ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের দৃশ্যমানতা কমতে পারে।