রাস্তা জুড়ে গর্তের জেরে বিপজ্জনক দুর্গাপুর সেতু, নজর নেই কারও
আনন্দবাজার | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
রাস্তার দু’দিকেই বড় বড় গর্ত। সেতুতে ওঠা-নামার সময়ে বিপজ্জনক ভাবে লাফাচ্ছে গাড়ি। বাইকচালকদের জন্য সেই রাস্তা দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে। এমনকি, ঝাঁকুনির জেরে অটো থেকে দু’তিন দিন আগে পড়ে গিয়েছেন যাত্রীও। উল্টোডাঙা মোড় ও ভিআইপি রোডের সংযোগকারী দুর্গাপুর সেতুর উপরের রাস্তা জুড়ে গর্ত তৈরি হয়ে এমনই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেখানে।
উত্তর শহরতলি থেকে কলকাতায় যাতায়াতের জন্য উল্টোডাঙার দুর্গাপুর সেতু অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে সেতুর উপরে ওই রাস্তা ভেঙে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। তার জেরে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে ওই রাস্তা। সেতুতে ওঠা বা নামার সময়ে গাড়ির গতির উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকেই, বিশেষত বাইক এবং অটোচালকেরা। তাঁরা জানান, সেতুতে ওঠার সময়ে গাড়ির গতি বাড়াতে হয় এবং সেতু থেকে নামার সময়ে এমনিতেই গাড়ির গতি বেড়ে থাকে। ফলে যে কোনও সময়ে গাড়ি উল্টে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন।
দুর্গাপুর সেতুতে উঠলেই চোখে পড়বে রাস্তার বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে থাকা ওই সব গর্ত। কোথাও রাস্তা ভেঙে ইট বেরিয়ে পড়েছে। তা সত্ত্বেও কেন প্রশাসনের সে দিকে নজর নেই, সেই প্রশ্ন তুলছেন নিত্যযাত্রীরা। খবর এমনও যে, ওই রাস্তা দিয়ে অটো বা বাইকে চেপে চলতে গিয়ে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের শারীরিক সমস্যা হচ্ছে। ওই পথে চলাচলকারী উল্টোডাঙা-বাগুইআটি রুটের অটোচালক সোমনাথ দত্ত যেমন জানালেন, দিন দশেক আগে অটোয় উঠে ঝাঁকুনির চোটে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। সেতু থেকে নামার পরে অটো থামিয়ে তাঁকে জল খাওয়ানো হয়। আবার দিন পাঁচেক আগে সেতুর উপর দিয়ে উল্টোডাঙার দিকে যাওয়ার সময়ে একটি অটোর সামনের চাকা গর্তে পড়ে ভেঙে যায়। সেই ঘটনায় জখম হন এক যাত্রী। ঝাঁকুনির জেরে অটোয় বসেই দু’তিন দফায় জখম হয়েছেন যাত্রীরাও।
স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, আড়াই-তিন মাস আগে ওই সেতুর রাস্তায় তাপ্পি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরে ফের রাস্তা ভেঙে তার কঙ্কালসার চেহারা বেরিয়ে পড়েছে। যা নিয়ে কোনও মহলেরই কোনও হেলদোল নেই। ওই রাস্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী-সহ বহু বিশিষ্ট নাগরিক যাতায়াত করেন। গাড়িচালকদের যদিও দাবি, ওঠা-নামার সময়ে খুব বেশি না হলেও ঝাঁকুনি টের পাওয়া যায়। রাস্তাটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) জানাচ্ছে, পুজোর আগে সেখানে সংস্কার হয়েছিল। কিছু কাজ এখনও বাকি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই কাজ শেষ করা হবে বলে দাবি। বৃষ্টি এবং পুজোর সময়ে বিপুল গাড়ির চাপে ওই রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছে কেএমডিএ।