'শাশুড়ি থাকলে আমি থাকব না', বাড়ি থেকে মাকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য স্ত্রীর জোরাজুরি! শেষমেশ চরম পরিণতি যুবকের
আজকাল | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছোট্ট সংসারে মায়ের জায়গা নেই। মায়ের দেখভাল করতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন স্ত্রী। বারবার চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন, শাশুড়িকে পুরনো বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য। এমনকী স্বামীকেও জানিয়ে দেন, শাশুড়ির সঙ্গে তিনি থাকতে পারবেন না। স্ত্রীর চাপে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে চরম পদক্ষেপ করলেন এক যুবক। আবাসন থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন তিনি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদাবাদে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত যুবকের নাম, যোগেশ কুমার। পেশায় তিনি রেডিওলজিস্ট ছিলেন। আবাসনের ১৬ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি। গ্রেটার ফরিদাবাদ এলাকায় তিনি পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন। সেই আবাসনের উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
মৃত যুবকের কাকা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। যোগেশ কুমারের স্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। মৃত যুবকের কাকার অভিযোগ, যোগেশের স্ত্রী প্রায়শই নানাভাবে হেনস্থা করতেন তাঁকে। এমনকী ওই ফ্ল্যাটে যোগেশের মায়ের থাকা নিয়েও সমস্যা ছিল তাঁর। একাধিকবার জানিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে শাশুড়ি থাকতে পারবেন না। স্ত্রীর কারণেই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন যোগেশ।
ভুপানি থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন, যোগেশের স্ত্রী, তাঁর দুই শ্যালক, এবং শ্বশুর ও শাশুড়ি। পুলিশ আরও জানিয়েছে, মৃত যুবক আদতে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের বাসিন্দা ছিলেন। গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রেডিওথেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করতেন। নেহা নামের এক তরুণীর সঙ্গে ন'বছর আগে বিয়ে হয়েছিল। ছ'বছরের এক সন্তান রয়েছে তাঁদের।
এর আগে দম্পতি নয়ডায় থাকতেন। তখন নেহা এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। স্বামী ও স্ত্রী দু'জনে কর্মরত ছিলেন বলেই, ছেলের দেখাশোনার জন্য মাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন যোগেশ। কয়েক মাস আগে সেক্টর ৮৭-তে একটি নতুন ফ্ল্যাটে ছেলেকে নিয়ে চলে আসেন যোগেশ। কিন্তু নেহা সঙ্গে আসেননি। ছেলের কারণে মাকে নিয়ে আসেন তিনি। একমাস আগেই নেহাও এই ফ্ল্যাটে এসে থাকতে শুরু করেন।
তখন থেকেই নেহা ও তাঁর ভাইয়ের যোগেশকে মানসিক নির্যাতন করতে শুরু করেন। একাধিকবার জানিয়ে দেন, এই ফ্ল্যাটে তাঁর মাকে রাখা চলবে না। যা ঘিরে বহুবার তুমুল অশান্তিও হয়। গত বৃহস্পতিবার নেহাকে নয়ডার ফ্ল্যাটে পৌঁছে এই আবাসনে ফিরে আসেন যোগেশ। এরপরই চরম পদক্ষেপ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই দাম্পত্য কলহের জেরে আরও এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল। ভালবেসে বিয়ের পরেও নিত্যদিন অশান্তি। ঝামেলায় জেরবার দম্পতি। অবশেষে দুই বছরের শিশুকে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে চরম পদক্ষেপ করল তারা। একসঙ্গে ড্যামে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হল দম্পতি। দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলায়। শনিবার এক ড্যামে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয় এক দম্পতি। চরম পদক্ষেপ করার আগে রাস্তার ধারে দুই বছরের শিশুকে রেখে গিয়েছিল তারা। পুলিশ আধিকারিক দেবকরণ দেহেরিয়া জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে বুকাখেদি ড্যামে। মৃতেরা হলেন শুভম কারদাতে (২৫) ও তাঁর স্ত্রী রোশনি (২৪)।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, চার বছর আগে ভালবেসেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন শুভম ও রোশনি। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই দুজনের মধ্যে ঝামেলা বাড়তে থাকে। নিত্যদিনের অশান্তির জেরেই চরম পদক্ষেপ করেছে দম্পতি। শনিবার সকালে ঝগড়া, অশান্তির পর সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন রোশনি। তাঁর পিছু নেন শুভম। এরপর তাঁরা ওই ড্যামের কাছে পৌঁছে যান।
এরপর শুভম তাঁর মামাকে ফোন করেন। ফোন করে অনুরোধ করেন, তাঁর সন্তানকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য। এরপর ওই ড্যামে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয় দম্পতি। আর রাস্তার ধারেই পড়েছিল দুই বছরের শিশু। ফোন পেয়েই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন শুভ্রের বাবা। সেখানে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে। কিন্তু ততক্ষণে শুভম ও রোশনির জীবন শেষ।