• শুধু টাকা আর টাকা! পণের জন্য নির্মম শারীরিক নির্যাতন, বিয়ের ছ'মাস পরেই মর্মান্তিক পরিণতি গর্ভবতী তরুণীর
    আজকাল | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিয়ের পর থেকেই চরম শারীরিক নির্যাতন। পণের জন্য সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে চরম হেনস্থা। মারতে মারতেই স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ছ'মাস আগেই বিয়ে হয়েছিল এই নবদম্পতির। গর্ভবতী তরুণীর রহস্যমৃত্যুতে শিউরে উঠেছেন স্থানীয়রাও। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টঙ্ক জেলায় এক গর্ভবতী গৃহবধূর রহস্যমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। টঙ্ক থানার অন্তর্গত একটি এলাকায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ গর্ভবতী গৃহবধূর রহস্যমৃত্যুর খবর পায় পুলিশ। 

    পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, মৃত তরুণীর নাম, মণীশা। কুলদ্বীপ নায়ক নামের এক যুবকের সঙ্গে মাত্র ছ'মাস আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। কুলদ্বীপ পুলিশ আধিকারিকের অফিসে ক্লার্ক হিসেবে কাজ করেন। পরিবারের অভিযোগ, গর্ভবতী তরুণীকে পিটিয়ে খুন করেছেন কুলদ্বীপ। 

    মাধোপুর জেলার বাসিন্দা মণীশার ভাই প্রহ্লাদ জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই আরও পণের দাবি চাপ সৃষ্টি করতেন কুলদ্বীপ। পণ না দিলে পুলিশি কড়া পদক্ষেপ করবেন বলেও হুমকি দিতেন। পণের জন্য রোজ সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক হেনস্থা করতেন তিনি। 

    পরিবারের আরও অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মণীশাকে শারীরিক নির্যাতন করতে শুরু করেন কুলদ্বীপ। বিষয়টি যাতে বাইরে জানাজানি না হয়, তার জন্য পরিবারের সঙ্গে মণীশাকে যোগাযোগ রাখতে দিতেন না। তবে গোপন সূত্রে পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরেছিলেন, দীপাবলির সময় এবং ভাইফোঁটার পরেও মণীশাকে মারধর করেছেন কুলদ্বীপ। এই ঘটনায় একটি মামলা রুজু করে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। 

    প্রসঙ্গত, গত আগস্ট মাসে পণের দাবিতে আরও এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। পণের জন্য সদ্য বিবাহিত তরুণীর গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল বিহার। এবারেও পণ হিসেবে সোনার গয়নার দাবি করেছিল শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু খানিকটা সময় চেয়েছিলেন তরুণীর বাবা। অধৈর্য হয়ে তরুণীকে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছিল বিহারের খাগাড়িয়া জেলার বরখান্দি তোলা গ্রামে। জানা গেছে, তরুণীর সঙ্গে বিভীষণ যাদবের বিয়ে হয়েছিল এক বছর আগে। তরুণীর বাবা জাদো যাদব জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পণের জন্য হেনস্থা করতেন তরুণীকে। আরও সোনার গয়নার দাবি করতেন তাঁরা। এদিকে তরুণীর বাবা আশ্বাস দেন, আর দুই মাস পরেই তিনি সব দাবি পূরণ করবেন। 

    কাঁদতে কাঁদতেই জাদো যাদব জানান, 'আমি শুধুমাত্র দুই মাস সময় চেয়েছিলাম!' আরেক আত্মীয় জানান, সোনার গয়না না পেলে তরুণীকে খুনের হুমকিও দিয়েছিল তারা। তাঁদের আরও অভিযোগ, আগে বিভীষণ চাষবাসের কাজ করতেন। কিন্তু গত মাস ধরেই বিহারেই গাঁজা ও বিষমদ বিক্রি করতেন। তরুণীর ভাইয়ের অভিযোগ, প্রথমে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এরপর তাঁর দেহটি ঝুলিয়ে দেন। তরুণীর শরীরেও আঘাতের চিহ্ন ছিল। 

    তরুণীর বাবা জানিয়েছিলেন, 'আমার যা সার্মথ্য ছিল, সবকিছুই দিয়েছিলাম। তাও সোনার হার আর গাড়ির দাবি করছিল মেয়ের শ্বশুরবাড়ি। সদ্য ছেলের বিয়ে দিয়েছি। ছেলের বিয়ের সময় থেকেই সোনার হারের দাবিদাওয়া শুরু হয়। দুই মাস সময় চেয়েছিলাম। তার মধ্যেই মেয়েকে খুন করে দিল।' তরুণীর দেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিল পুলিশ। অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক। 
  • Link to this news (আজকাল)