নিঃঝুম রাতে চুপিচুপি দেওরের ঘরে ঢুকল বৌদি, ফঁস করে ছুরি দিয়ে কেটে দিল যৌনাঙ্গ! নৃশংস ঘটনা যোগী রাজ্যে ...
আজকাল | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রয়াগরাজের মাওয়াইমা এলাকার মালখানপুর গ্রামে এক নৃশংস ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে, যা প্রথমে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের হতবাক করে দেয়। নিজের দেওরকে নৃশংসভাবে আক্রমণ করে তার যৌনাঙ্গ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক মহিলার বিরুদ্ধে। তদন্তে প্রকাশ, প্রতিশোধ এবং পারিবারিক সম্পর্কের টানাপোড়েনই ছিল এই ভয়াবহ ঘটনার মূল কারণ।
ঘটনাটি ঘটে ১৬ অক্টোবর রাতে। ওইদিন রাতের প্রায় মধ্যরাতের দিকে ২০ বছর বয়সি যুবক উমেশ, রাম অসারের ছেলে, নিজের ঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা ছুটে এসে দেখেন, উমেশ মাটিতে কাতরাচ্ছেন, শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন এবং তার যৌনাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে। আতঙ্কিত পরিবার দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং “অজ্ঞাত আক্রমণকারীর” বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে।
প্রথমদিকে পুলিশ ঘটনাটিকে রহস্যজনক হিসেবে দেখলেও তদন্ত যত এগোয়, ততই জটিল পারিবারিক সম্পর্কের এক জাল উন্মোচিত হয়। জানা যায়, উমেশের বড় ভাই উদয়ের স্ত্রী মঞ্জু—যিনি এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত—এর ছোট বোনের সঙ্গে উমেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তারা বিয়ের কথাও ভাবছিলেন। কিন্তু পরিবার এই সম্পর্কের বিরোধিতা করে, কারণ তা আত্মীয়তার দিক থেকে অনুচিত বলে মনে করা হয়। অবশেষে উমেশ সম্পর্ক থেকে সরে দাঁড়ান এবং অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এই সিদ্ধান্তে গভীরভাবে আঘাত পান মঞ্জুর ছোট বোন। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং বিষণ্ণতায় ভুগতে থাকেন। বোনের এই অবস্থা দেখে মঞ্জুর মধ্যে জমতে থাকে ক্ষোভ ও প্রতিশোধস্পৃহা। তদন্তে জানা যায়, এই প্রতিশোধের আগুন থেকেই মঞ্জু ১৬ অক্টোবর রাতে উমেশের উপর আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই রাতে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর মঞ্জু রান্নাঘর থেকে একটি ধারালো ছুরি নিয়ে নিঃশব্দে উমেশের ঘরে ঢোকেন। মুহূর্তের মধ্যেই তিনি উমেশকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করেন এবং শেষে তার যৌনাঙ্গ কেটে দেন। উমেশ চিৎকার করলে পরিবারের লোকজন দৌড়ে আসেন, কিন্তু ততক্ষণে মঞ্জু পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় উমেশকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সাড়ে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তার জরুরি অস্ত্রোপচার চলে।
তদন্তে পুলিশ প্রথমে বিভ্রান্ত থাকলেও পারিবারিক সম্পর্ক ও আলাপচারিতার ভিত্তিতে সন্দেহ ঘনীভূত হতে থাকে মঞ্জুর দিকে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার বক্তব্যে একাধিক অসংগতি ধরা পড়ে। অবশেষে প্রয়াগরাজ পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (ACP) বিবেক কুমার যাদব জানান, “তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে মঞ্জু নিজেই এই হামলায় জড়িত। দেওরের প্রেম ভেঙে দেওয়ার প্রতিশোধ নিতেই সে এই নৃশংস আক্রমণ চালায়।”
বর্তমানে মঞ্জু পলাতক। পুলিশ দল তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। এদিকে, চিকিৎসক ডা. গিরিশ মিশ্র জানান, উমেশ বর্তমানে বিপদমুক্ত হলেও তার পুরোপুরি সেরে উঠতে অন্তত সাত-আট মাস সময় লাগবে। তিনি বলেন, “অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে, তবে রোগীকে দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক ও মানসিক পুনর্বাসনের প্রয়োজন হবে।”
ঘটনায় মালখানপুর গ্রামে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এলাকাবাসী একবাক্যে এই নির্মম ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং পুলিশ প্রশাসনের কাছে দ্রুততম সময়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন।