আজকাল ওয়েবডেস্ক: আবারও গুজরাটে নারী নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে। এবার প্রকাশ্য দিবালোকে এক বৃদ্ধের যৌন লালসার শিকার এক নাবালিকা। খেলার অজুহাতে নাবালিকাকে কোলে বসিয়ে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে ওই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। তিনদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও অভিযুক্ত বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের জামনগরে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে জামনগর শহরের আপনা বাজার এলাকায়। একটি দোকানের সামনে প্রকাশ্যে এক নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে এক বৃদ্ধ।
জানা গেছে, ওই এলাকায় দিনের বেলায় কয়েকজন শিশু, নাবালিকা একসঙ্গে খেলাধুলা করছিল। হঠাৎ ওই বৃদ্ধ এসে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করবে বলে আবদার করে। খানিকক্ষণ তাদের সঙ্গে খেলাধুলার পর একটি দোকানের সামনে সে বসে পড়ে। তখনই ওই নাবালিকাকে ডাকে নিজের কাছে। এরপর কোলে বসিয়ে নাবালিকার শ্লীলতাহানি করে। যে মুহূর্তটি ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, কোলে বসিয়ে নাবালিকাকে যৌন হেনস্থা করতে শুরু করে ওই বৃদ্ধ। অস্বস্তিতে ছটফট করতে থাকে ওই নাবালিকা। বিষয়টি নজরে পড়ে নাবালিকার এক বন্ধুর। সঙ্গে সঙ্গে সে ছুটে এসে নাবালিকাকে উদ্ধারের চেষ্টাও করে। ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় এক তরুণ ঘটনাটি দেখেন। তিনিই নাবালিকাকে উদ্ধারের জন্য ছুটে আসেন। বিষয়টি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াতেই ওই বৃদ্ধ ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়।
নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। গুজরাটে নারী নিরাপত্তা নিয়েও প্র্শ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা। দিনের আলোয় নাবালিকাদের এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হলে, রাতের অন্ধকার যে কতটা বিপজ্জনক তার ঘিরেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বহু মানুষ। গুজরাট পুলিশ ও জামনগর পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন সকলে।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবর মাসেই গুজরাটে আরও একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল। মধ্যরাতে বাড়ি ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার ৫০ বছরের এক বিধবা প্রৌঢ়া। গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পূর্ব পরিচিতদের বিরুদ্ধেই। ঘটনার এক সপ্তাহ পর আসল ঘটনা প্রকাশ্যে এল। ২৪ ঘণ্টায় লাগাতার গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন নির্যাতিতা।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটে। পুলিশ জানিয়েছে, গত সপ্তাহে গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের গির সোমনাথ জেলার উনা শহরে। ৫০ বছর বয়সি এক বিধবা প্রৌঢ়া গণধর্ষণের শিকার হন। ২৪ ঘণ্টায় লাগাতার তিন যুবকের যৌন লালসার শিকার হন তিনি। তিন অভিযুক্তই পেশায় মৎস্যজীবী। বুধবার তিন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার অসহ্য পেটের যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন বিধবা প্রৌঢ়া। তাঁর পরিবারের সদস্যরাই তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকদের জানান, গত সপ্তাহে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন সম্প্রতি। সেই হাসপাতালের চিকিৎসকরা এরপর পুলিশে বিষয়টি জানান। এরপরই তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
নির্যাতিতা সেদিন নববন্দর মেরিন থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনজনের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, দশ বছর আগে প্রৌঢ়ার স্বামী মারা যান। তারপর থেকে একাই রোজগার করে সংসার চালান। শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি।
পুলিশকে নির্যাতিতা প্রৌঢ়া জানান, এক সপ্তাহ আগে মান্ডভি চেকপোস্ট থেকে গ্রামের দিকে ফিরছিলেন। রাতে কোনও যানবাহন পাননি। তখনই ওই তিন অভিযুক্ত বাইকে করে যাচ্ছিল। প্রৌঢ়ার সামনে বাইক নিয়ে পথ আটকায় তারা। তিনজনেই নির্যাতিতার পূর্ব পরিচিত ছিল। বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দিতেই প্রৌঢ়া রাজি হয়ে যান।
বাইকে চড়ার পর খানিকটা যাওয়ার পরেই প্রৌঢ়াকে নিয়ে তিন যুবক নির্জন একটি জায়গায় চলে যায়। সেখানে প্রথমে তিনজনে ধর্ষণ করে তাঁকে। এরপর এক অভিযুক্তের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আবারও গণধর্ষণ করে প্রৌঢ়াকে। পরদিন বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার পরেও ক্রমাগত হুমকি দেয়। বিষয়টি বাইরে ফাঁস করলেই আবারও ধর্ষণের হুমকি দিয়েছিল প্রৌঢ়াকে।