সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ডাবল ইঞ্জিনের রাজ্যে উচ্চবর্ণের হাতে প্রহৃত হয়ে প্রাণ হারাতে হল অনিকেত জাঠব নামক এক দলিতকে। স্থানীয় বাইকের গ্যারাজে কর্মরত যুবকের ‘অউকাত’ (সামাজিক অবস্থা) মনে করিয়ে দিতেই এই কাজ করেছে সাতজন ঠাকুর সম্প্রদায়ের ব্যক্তি। ঘটনার জেরে শোকস্তব্ধ উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডার রবুপুরা এলাকা।
ঘটনার সূত্রপাত দুর্গাপুজোর সময়। উত্তর ভারতজুড়ে সেই সময় ধুমধাম করে পালন হয় নবরাত্রি। বসে রামলীলার আসর। সেখানেই অনিকেতের এক বন্ধুকে তাঁর জাত তুলে কটাক্ষ করছিল সাত ঠাকুর সম্প্রদায়ের লোক। যার প্রতিবাদ করেন অনিকেত। সেই থেকেই তাঁদের লক্ষ্য করে বারবার হামলা চালায় ওই সাত ঠাকুর। ১৫ অক্টোবর ছিল অনিকেতের জন্মদিন। সে রাতে বাড়ির পাশের এক মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে কেক কাটছিলেন অনিকেত। সেই সময়ই তাঁর উপর হামলা চালায় অভিযুক্তরা। বাঁচাতে গেলে বেধড়ক মার মারা হয় অনিকেতের কাকা সুমিতকে। দু’জনকেই আহত অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় ও পরে দিল্লির এক হাসপাতালে আনা হয়। বৃহস্পতিবার সুমিত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও বাড়ি ফেরা হল না অনিকেতের। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার করা হয়েছে দু’জনকে।
উত্তরপ্রদেশে দলিত নিগ্রহের ঘটনা অবশ্য প্রথম নয় জাতপাতের নামে এই রাজ্যে প্রায়শই এই ধরনের অপরাধ উঠে আসে শিরোনামে। এর আগে গত ২ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলিতে হিংসার শিকার হন ফতেপুরের বাসিন্দা হরিওম বাল্মীকি। গণপিটুনি দিয়ে খুন করা হয় তাঁকে। ঘটনার নিন্দায় সরব হন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছিলেন, ‘হরিওম বাল্মীকির সঙ্গে যা ঘটেছে, তা এই দেশের সংবিধানের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অপরাধ। এই ঘটনা সমাজের কলঙ্ক। আমরা এই অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। এই দেশ মনুবাদ দ্বারা নয়, বাবা সাহেবের সংবিধান দ্বারা পরিচালিত হবে।’ এর পর ফতেপুরে হরিওমের বাড়িতে উপস্থিত হন তিনি। সান্তনা দেওয়ার পাশাপাশি মৃতের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।