ভুয়ো শংসাপত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স! কুর্নুলের বাস দুর্ঘটনায় পুলিশের জালে চালক
প্রতিদিন | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাইকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ ও অগ্নিকাণ্ডে অন্ধপ্রদেশের কুর্নুলে প্রাণ গিয়েছে ২৫ জনের। এবার ওই ঘটনায় বাস চালককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। অভিযোগ, চালক ভুয়ো শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র ব্যবহার করে ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করেছিলেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই মুখ পুড়েছে শহর প্রশাসনের। দক্ষিণের রাজ্যের পথ নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত লাক্সারি বাসের চালকের নাম মিরিয়ালা লক্ষ্মাইয়া। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, পঞ্চম শ্রেণি অবধি পড়াশোনা করেছেন মিরিয়ালা। যদিও দশম শ্রেণি উত্তীর্ণের ভুয়ো শংসাপত্র যোগার করে ড্রাইভিং লাইসেন্স করান তিনি। ড্রাইভিং লাইসেন্সের আইনে বলা আছে যে যাত্রীবাহী তথা ভারী যানবাহনের জন্য চালক হতে গেলে কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হতে হবে। যদিও এই নিয়মকে ফাঁকি দেওয়াই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষাগত যোগ্যতার ভুয়ো শংসাপত্র জমা করে ড্রাইভিং লাইসেন্স মিলে যায়। ‘গান্ধারী’ প্রশাসনের সামনেই এমনটা ঘটে থাকে বলে অভিযোগ।
এদিকে অন্ধ্রপ্রদেশের দুর্ঘটনার নেপথ্যে নেশাগ্রস্ত বাইক চালকের দিকে অভিযোগের আঙুল ওঠার পরই পুলিশ জানিয়ে দিল, যাঁরা নেশা করে গাড়ি বা বাইক চালান, তাঁদের জন্য কোনও মার্জনা নয়। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার ভি সি সজ্জনর এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘মদ্যপ চালকরা জঙ্গি। এবং তাঁদের কার্যকলাপ আমাদের রাস্তায় সন্ত্রাস ছাড়া কিছু নয়। আমাদের রাস্তায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের চেয়ে কম কিছু নয়। কুর্নুল বাস দুর্ঘটনা, যা ২০ জন নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, তা মোটেই দুর্ঘটনা ছিল না। এই গণহত্যা প্রতিরোধ করা যেত। এক মাতাল বাইক চালকের বেপরোয়া এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণেই তা ঘটেছিল।’ সেই সঙ্গেই দু’টি ভিডিও-ও তিনি শেয়ার করেছেন। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।
কী দেখা গিয়েছে সিসিটিভি ফুটেজে? যে বাইকের সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষ হয় সেই বাইক চালক বি শিবশঙ্করকে দেখা যাচ্ছে ভিডিওতে। যা দেখে অনুমান করা হচ্ছে, মত্ত অবস্থায় ছিলেন ওই যুবক। শুক্রবার ভোরে যখন দুর্ঘটনা ঘটে তার কিছুক্ষণ আগে পেট্রল পাম্পে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে কোনও কর্মীকে দেখতে না পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে সেখান থেকে দ্রুতগতিতে বেরিয়ে আসেন।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শিবশঙ্কর ও আর এক যুবক বাইকে এসে পাম্পের সামনে দাঁড়িয়েছেন। ডাকাডাকির পরও কাউকে না পেয়ে তাঁরা রাস্তার দিকে এগিয়ে যান। এরপর শিবশঙ্কর একা ফিরে আসেন এবং বাইক ঘুরিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যান। যাওয়ার সময় বেসামাল অবস্থায় দেখা যায় তাঁকে। একবার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যেতে যেতে নিজেকে সামলে নেন। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তবে কী বাসের সঙ্গে দুর্ঘটনার আগেই কোনওভাবে রাস্তায় পড়ে গিয়েছিলেন বাইক চালক? এরপর বৃষ্টি ও অন্ধকারের জেরে বাইক চালককে দেখতে না পেয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয় বাসটি? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।