• ছত্তিশগড়ে আরও ফিকে লাল সন্ত্রাস, বস্তারে অস্ত্র-সহ আত্মসমর্পণ ২১ মাওবাদীর
    প্রতিদিন | ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাওবাদমুক্ত ভারতের লক্ষ্যে আরও এক কদম। রবিবার ছত্তিশগড়ের বস্তার অঞ্চলে আত্মসমর্পণ করল আরও ২১ জন মাওবাদী। আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে রয়েছেন ১৩ জন মহিলা ক্যাডার ও ৮ জন পুরুষ। একসঙ্গে এতজন মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের পর প্রশাসনের আশা ছত্তিশগড়ের আজমেঢ় অঞ্চল ও উত্তর বস্তার অঞ্চল কার্যত মাওবাদী শূন্য। নিরাপত্তাবাহিনীর পাখির চোখ এখন দক্ষিণ বস্তার।

    লাগাতার অভিযান। একের পর এক শীর্ষ কমান্ডারের মৃত্যু দেশে মাওবাদীদের কোমর ভেঙে দিয়েছে। এই অবস্থায় সরকারের প্রস্তাব মেনে আত্মসমর্পণের ঝোঁক বেড়েছে মাওবাদীদের মধ্যে। মাসখানেক আগে কিষেনজির স্ত্রী সুজাতা-সহ শতাধিক শীর্ষ মাও কমান্ডার। সে ধারা অব্যাহত রয়েছে। এদিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ছত্তিশগড়ের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা বলেন, “মাওবাদীরা মোট ১৮টি অস্ত্র জমা দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৩টি একে ৪৭ রাইফেল, ৪টি এসএলআর, ২টি ইনসাস, ৬টি .৩০৩ রাইফেল, ২টি সিঙ্গেল শট ও একটি বিজিএল।” পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বস্তার অঞ্চলের মানুষ এখন এই লাল সন্ত্রাস থেকে মুক্তি চান। আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীরা বস্তারের মানুষের মনের কথা বুঝেছেন। ওনাদের লাল কার্পেটে অভ্যর্থনা জানানো হবে। লাগাতার আত্মসমর্পণে উত্তর বস্তার কার্যত মাওবাদী মুক্ত হয়েছে। দক্ষিণ বস্তারে যারা এখনও সন্ত্রাসের পথে রয়েছেন তাঁদের অনুরোধ, তাঁরা যেন অস্ত্র ছেড়ে সমাজের মূল ধারায় ফিরে আসেন।”

    উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে দেশ থেকে মাওবাদকে পুরোপুরি নির্মূল করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই লক্ষ্যে জোরকদমে শুরু হয়েছে কাজ। চলতি মাসেই একযোগে ছত্তিশগড় ও মহারাষ্ট্রে আত্মসমর্পণ করেন ২৫৮ জন মাওবাদী। স্পষ্ট ভাষায় শাহ জানিয়েছেন, “যারা হিংসাত্যাগ করে মূল স্রোতে ফিরছেন তাঁদের স্বাগত জানাই। কিন্তু যারা এখনও বন্দুক চালিয়ে যাবে তাঁদের নিরাপত্তা বাহিনীর মারণ শক্তির মুখোমুখি হতে হবে।”

    প্রসঙ্গত, মাওবাদীদের অস্ত্র ত্যাগ করাতে ‘নকশাল আত্মসমর্পণ এবং আক্রান্তদের পুনর্বাসন নীতি ২০২৫’-এ বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে ছত্তিশগড় সরকার। যেখানে আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের পুনর্বাসন, চাকরি, আর্থিক পুরস্কার এবং আইনি সুরক্ষা প্রদান করা হয়। মাওবাদী নেতাদের পদ অনুযায়ী সুবিধা প্রদান করা হয় নয়া পুনর্বাসন নীতিতে। রাজ্য কমিটি, আঞ্চলিক কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরোর সদস্যদের মতো উচ্চপদস্থ ক্যাডারদের এককালীন পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। যাঁরা লাইট মেশিনগান-সহ আত্মসমর্পণ করবেন, তাঁরাও পাবেন পাঁচ লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কার। যে সব ক্ষেত্রে মাওবাদী ইউনিটের ৮০ শতাংশ সদস্য একসঙ্গে আত্মসমর্পণ করবেন, সেখানে দ্বিগুণ পুরস্কার প্রদান করা হবে। পুনর্বাসনের এই প্যাকেজে রয়েছে চাকরি এবং সন্তানদের শিক্ষায় সাহায্যও।
  • Link to this news (প্রতিদিন)