গাছ থেকে পড়ে ভাঙে শিরদাঁড়া! জটিল অস্ত্রোপচারে রোগীকে সুস্থ করে নজির আলিপুর জেলা হাসপাতালের
প্রতিদিন | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: গাছ থেকে পড়ে ভেঙে যায় শিরদাঁড়া। ক্রমশ বন্ধ হতে থাকে হাঁটাচলা। এমনকী দুটি পা ক্রমশ অবশ হয়ে যেতে থাকে। ক্রমশ পরিস্থিতি জটিল হতে থাকে। এই অবস্থায় শিরদাঁড়ার জটিল অপারেশন করে নজির জেলা হাসপাতালের। অর্থপেডিক সার্জেন শুভেন্দু শিকদারের নেতৃত্বে হয় ওই অপারেশন। আর তা করতে বাইরে থেকে বেশ কিছু চিকিৎসা সংক্রান্ত সরঞ্জামও আনা হয়। দীর্ঘক্ষণ চলে সেই অপারেশন। আর তাতে এখন অনেকটাই সুস্থ আকিমুদ্দিন আনসারি। ফিরে এসেছে পায়ের জোরও। শুধু তাই নয়, কোনও অবলম্বন ছাড়াই হাঁটতে চলতেও পারছেন আকিমুদ্দিন।
আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের যশোডাঙার বাসিন্দা আকিমুদ্দিন আনসারি। বেশ কিছুদিন আগে গাছ থেকে পড়ে যান। প্রবল আঘাতে ভেঙে যায় শিরদাঁড়া। তড়িঘড়ি আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় আকিমুদ্দিনকে। এহেন পরিস্থিতির ফলে ক্রমশ অবনতি ঘটছিল তাঁর। ধীরে ধীরে অবশ হয়ে আসছিল পা। এমনকী হাঁটাচলার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলছিলেন। চলে গিয়েছিল রাতের ঘুমও। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হতে থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দ্রুত অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তা খুব একটা সহজ ছিল না।
হাসপাতালের অর্থপেডিক সার্জেন শুভেন্দু শিকদার এহেন অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু এজন্য প্রয়োজন ছিল বেশ কিছু সরঞ্জামের। খামতি রাখেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তড়িঘড়ি তা নিয়ে আসা হয় জেলা সদর হাসপাতালে। শুভেন্দু শিকদার জানান, ”উপর থেকে পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছিল। দুই পা অবশ হয়ে গিয়েছিল।” চিকিৎসকের কথায়, ”এক্ষেত্রে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও যে সমস্ত সরঞ্জামের প্রয়োজন ছিল তা ছিল না। কিন্তু দ্রুত তা নিয়ে আসা হয় এবং অপারেশন করা হয়।” এমন অপারেশন এখানে এই প্রথম বলেই জানান ওই চিকিৎসক। শুধু তাই নয়, অপারেশনের কয়েকদিনের মাথাতেই আকিমুদ্দিন আনসারি সুস্থ এবং হাঁটাচলা করতে পারছেন। তা অবশ্যই ভালোদিক বলে জানান ওই চিকিৎসক।
অন্যদিকে জেলা হাসপাতালের সুপার, ডাক্তার পরিতোষ মণ্ডল জানান, ”এই সমস্ত অপারেশন মেডিক্যাল কলেজ ছাড়া হয় না। কিন্তু এখানে সব সরঞ্জাম এনে চিকিৎসা করা হয়।” সুপারের কথায়, বাইরের কোনও হাসপাতালে ওই চিকিৎসা করাতে নুন্যতম এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়ে থাকে। কিন্তু জেলা হাসপাতালে এই অপারেশন নজির বলছেন হাসপাতাল সুপার।