জল জীবন মিশন প্রশংসা করলেও রাজ্যের প্রাপ্য নিয়ে নীরবই কেন্দ্রীয় সরকার
বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: কাজের প্রশংসা হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই কাজের জন্য হকের টাকাই মেটাচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলায় জল জীবন মিশনের বাস্তবায়ন নিয়ে তাই কেন্দ্রের ভূমিকায় প্রবল চর্চা শুরু হয়েছে। জল জীবন মিশন প্রকল্প রূপায়ণে প্রযুক্তি ব্যবহারের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ সরকার গৃহীত পদক্ষেপের ঢালাও প্রশংসা করতে হয়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে। রবিবার এই সংক্রান্ত একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। আর সেখানেই বাংলার উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। এই প্রশংসার তালিকায় যে পাঁচটি রাজ্যের নাম রয়েছে, তার অন্যতমই হল পশ্চিমবঙ্গ। একটি উত্তর-পূর্বের রাজ্য নাগাল্যান্ড। বাকি তিনটিই বিজেপি শাসিত রাজ্য। মহারাষ্ট্র, অসম এবং রাজস্থান।
কিন্তু একইসঙ্গে এই প্রেক্ষিতেই উঠতে শুরু করেছে একের পর এক প্রশ্নও। অভিযোগ, প্রকল্প রূপায়ণে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রশংসা করতে কার্যত বাধ্য হচ্ছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। কিন্তু তারপরেও জল জীবন মিশনের টাকা রাজ্যকে দিচ্ছে না কেন্দ্র। ২০২৪ সালের আগস্ট মাস থেকেই টাকা দেওয়া বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সরকারি সূত্রের দাবি, জল জীবন মিশন প্রকল্পে অন্তত আড়াই হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে রাজ্যের। এমনকি চলতি ২০২৫-২৬ আর্থিক বছরেও রাজ্যে জল জীবন মিশন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। এর মধ্যে রাজ্য দিয়েছে ৩৭০ টাকা। বাকি টাকার বন্দোবস্ত কেন্দ্র করেনি। ফলে রাজ্যকে ধারদেনা করে টাকা মেটাতে হয়েছে। বকেয়া রয়েছে অনেকটাই। প্রত্যাশিতভাবেই প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য যদি ভালো কাজ করেই থাকে, তাহলে তার প্রাপ্য টাকা কেন মিটিয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার? এই ব্যাপারে অবশ্য জলশক্তি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। জল জীবন মিশন প্রকল্পের ডিজিটাল নজরদারিতে রাজ্যের ‘জল মিত্র’ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন কেন্দ্রের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, এই ‘ম্যানেজমেন্ট ইনফর্মেশন সিস্টেমে’র (এমআইএস) মাধ্যমে ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত জল জীবন মিশন সংক্রান্ত ১৩ কোটি ৭০ লক্ষ অ্যাক্টিভিটির উপর নজর রাখা গিয়েছে। ২২ হাজার ১১১টি গ্রামের ৮০ লক্ষ ৩৯ হাজার বাড়িতে এই সংক্রান্ত পর্যালোচনা করা সম্ভব হয়েছে। এরই পাশাপাশি ৪ হাজার ৫২২টি জল বাঁচাও কমিটি তৈরি করা গিয়েছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, ‘জল মিত্রে’র মাধ্যমে রিয়েল টাইম আপডেট পাওয়া সম্ভব হচ্ছে। যদিও সারা দেশে সামগ্রিকভাবে এখনও পর্যন্ত ১৯ শতাংশ বাড়িতে নলবাহিত বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করা বাকি রয়েছে। সম্প্রতি দিল্লিতে এই প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছে জলশক্তি মন্ত্রক। সেখানে হাজির ছিল বাংলাও।