• বিশ্বের দরবারে ভারতের চাল ব্যবসাকে তুলে ধরতে কেন্দ্রের জোটসঙ্গী ‘প্রতারক’ ব্যবসায়ী, সমালোচনা তৃণমূলের
    বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি: দুর্নীতির অভিযোগ যেন পিছু ছাড়ছে না মোদি সরকারের। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন প্রেম চন্দ গর্গ। দেশের অন্যতম নামজাদা ব্যবসায়ী। তবে অন্যান্য ব্যবসার থেকেও প্রেম চন্দের ‘খ্যাতি’ চাল ব্যবসায়ী হিসেবে। সেই সঙ্গে জালিয়াতি, প্রতারণার পাশাপাশি ৯৭৯ কোটি টাকার ব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। রিপোর্টার্স কালেক্টিভ সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে সিবিআই সহ একাধিক সংস্থা তদন্ত করছে প্রেম চন্দের বিরুদ্ধে। আর এমনই বিতর্কিত একজনের সঙ্গে জোট বেঁধে ‘ভারত ইন্টারন্যাশনাল রাইস কনফারেন্স’-এর আয়োজন করতে চলেছে মোদি সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রক। আগামী ৩০ ও ৩১ অক্টোবর দিল্লিতে এই অনুষ্ঠানের দায়িত্বে বাণিজ্য মন্ত্রক ও প্রেম চন্দ গর্গ ছাড়াও রয়েছে একটি অলাভজনক সংস্থা। গোটা বিষয়টি সামনে আসতেই মোদি সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছে বিরোধী তৃণমূল কংগ্রেস। 

    রিপোর্টার্স কালেক্টিভের একটি খবরের লিংক শেয়ার করে ঘাসফুল শিবিরের তরফে এক্স হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, দুর্নীতির বিষয়ে মোদি সরকারের সঙ্গে কেউ পাল্লা দিতে পারবে না। কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের মন্ত্রক প্রেম চন্দের মতো একজন অপরাধীর সঙ্গে মিলে ‘ভারত ইন্টারন্যাশনাল রাইস কনফারেন্স’-এর আয়োজন করছে। আবার নন-বাসমতী রাইস ডেভেলপমেন্ট ফান্ড বোর্ডে যে তিনজন বেসরকারি বাণিজ্য প্রতিনিধি রয়েছেন, সেখানেও রয়েছেন এই ব্যবসায়ী। কে এই প্রেম চন্দ? স্মাগলিং, জালিয়াতি, প্রতারণার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত এই ব্যবসায়ী। 

    মোদির ‘বিকশিত ভারত’-এর এই উজ্জ্বল নক্ষত্র প্রেম চন্দের অপরাধের দীর্ঘ তালিকাও তুলে ধরেছে তৃণমূল। বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ভারতীয় স্টেট ব্যাংক সহ পাঁচটি ব্যাংকের কনসোর্টিয়াম থেকে ৯৭৯ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা প্রতারণার ঘটনায় প্রেম চন্দ গর্গ ও তাঁর স্ত্রীর দিকে আঙুল তুলেছিল সিবিআই। পাশাপাশি ২০১৬-১৭ সালে ১৭ কোটি টাকা কাস্টমস শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে সোনা আনার ঘটনায় তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করে ডিরেক্টরেট অব রেভেনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই) ও পুলিশ। এখানেই শেষ নয়। কর্ণাটকে অবৈধ খনি থেকে তোলা ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার আকরিক লৌহ রফতানির ঘটনায় কর্ণাটকের একটি বিশেষ আদালত গর্গকে দোষী সাব্যস্ত করে ও ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়। ওই মামলাতেই প্রেম চন্দ দাবি করেছিলেন, তাঁর আগাম জামিনের জন্য তৎকালীন সিবিআই ডিরেক্টর ১৫ কোটি টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। ২০১৫ সালে নাইজেরিয়ার একটি ব্যাংকে প্রায় ৪২ লক্ষ মার্কিন ডলারের প্রতারণায় নাম জড়ায় প্রেম চন্দ ও তাঁর ছেলে দেবাশিসের। এমন একজন অপরাধীকেই কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানের জন্য বেছে নিয়েছেন মোদি মন্ত্রিসভার সদস্যরা। মোদি সরকার ও প্রেম চন্দ গর্গকে ‘চোরে চোরে মাসতুতো ভাই!’ বলেও কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
  • Link to this news (বর্তমান)