• ২০২৬-এ প্রার্থী হচ্ছেন এশিয়াডে সোনাজয়ী জলপাইগুড়ির স্বপ্না বর্মন? দল নিয়ে জল্পনা
    বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
  • ব্রতীন দাস, জলপাইগুড়ি: খেলার মাঠ ছেড়ে এবার রাজনীতির আঙিনায় পা দিতে চলেছেন এশিয়াডে সোনাজয়ী জলপাইগুড়ির স্বপ্না বর্মন!এমনকী ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হতেও তাঁর আপত্তি নেই । রবিবার নিজেই সেই জল্পনাকে উস্কে দিয়েছেন। তবে কোন দলে যোগ দিতে চলেছেন  তা জানাতে নারাজ অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অ্যাথলিট। 

    জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরের ঢিংপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে বসে তিনি বলেন, সময় হলেই সবটা জানতে পারবেন। এতটুকু বলতে পারি, ২০২৬-এ সারপ্রাইজ থাকছে। তবে রাজনীতির ময়দানে পা রাখার ব্যাপারে যে কথাবার্তা শুরু হয়ে গিয়েছে, তা স্বীকার করেছেন স্বপ্না। বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষমহল থেকে অফার আছে। তবে আমি কিছু শর্ত রেখেছি। যারা সেই শর্ত মানবে, তাদের হয়েই ময়দানে নামব। প্রার্থী হতেও আপত্তি নেই। রাজনীতির মঞ্চে শামিল হতে ঠিক কী শর্ত রেখেছেন ‘সোনার মেয়ে’? স্বপ্না বলেন, আমি উত্তরবঙ্গের মেয়ে। ফলে উত্তরের উন্নয়ন আমার ‘পাখির চোখ’। সবার প্রথমে ক্রীড়াক্ষেত্রে উন্নয়ন চাই। উত্তরবঙ্গে একটিও সিন্থেটিক ট্র্যাক নেই। মাঠ, ট্র্যাক না থাকলে আরও স্বপ্না বর্মন তৈরি হবে কীভাবে? তাছাড়া উত্তরবঙ্গে এইমস চাই। কর্মসংস্থান চাই। শিল্প চাই। যে দল এগুলির ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হবে, সেই দলে নাম লেখাতে আপত্তি নেই।  

    রেলের চাকরিতে বর্তমানে আলিপুরদুয়ারে কর্মরত স্বপ্না। ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসে বাবা-মায়ের সঙ্গে জমিতে ধান কাটার কাজে হাত লাগিয়েছেন তিনি। এদিনও সকালে ধান কাটতে যান। বললেন, বাবা একসময় ভ্যান চালাতেন। মা চা বাগানে কাজ করতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি আমিও দৈনিক ৬০ টাকা হাজিরায় কাজ করেছি। কোন পরিস্থিতি থেকে উঠে এসেছি, কারও অজানা নয়। তাই সেলিব্রিটি হয়ে নয়, মাটির মেয়ে হিসেবে থাকতে চাই। 

    আগামী এশিয়ান গেমসে কি দেখা যাবে স্বপ্নাকে? প্রশ্ন শুনে গলায় কিছুটা আক্ষেপের সুর। বলেন, আগামী বছর অংশ নেওয়ার প্রবল ইচ্ছে। কিন্তু কোচ পাচ্ছি না। প্রথম থেকে কোচ সুভাষ সরকারের তত্ত্বাবধানে প্র্যাকটিস করে এসেছি। তিনি সাই থেকে অবসর নিয়েছেন। এখন ওড়িশা সরকার তাঁকে বেতন দিয়ে রেখে দিয়েছে। ফলে সেখানকার ছেলেমেয়েদের অনুশীলন করাচ্ছেন। জানিয়েছেন, আমাকে প্র্যাকটিস করাতে পারবেন না। তাছাড়া এশিয়ান গেমসেরও আর দেরি নেই। ফলে গোটা বিষয়টি নিয়ে আমি কনফিউজড। 

    আগামীদিনে কি স্বপ্নাকে ক্রীড়াক্ষেত্রে অন্য কোনও ভূমিকায় দেখা যাবে? সোনার মেয়ের জবাব, যেতেই পারে। কোচিং করানোর জন্য যেসব সার্টিফিকেট প্রয়োজন,পরীক্ষা দিয়ে তার সবই পেয়েছি। নিজের অ্যাকাডেমি তৈরিরও ইচ্ছে রয়েছে। অবশ্যই তা উত্তরবঙ্গে। তবে আমার পক্ষে জমি কিনে অ্যাকাডেমি করা সম্ভব নয়। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার এগিয়ে এলে হয়তো অ্যাকাডেমির স্বপ্ন পূরণ হবে। ২০১৮-এর এশিয়াডের এই সোনাজয়ীকে নিয়ে তৈরি হতে চলেছে বায়োপিক। কথায় কথায় তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। 
  • Link to this news (বর্তমান)