• ‘মন-থা’ তৈরির আগেই জলীয় বাষ্পের দাপট, বিকেলে তুমুল বৃষ্টি শহরের দুই প্রান্তে
    বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘মন-থা’ তৈরি হওয়ার আগেই রবিবার বিকেলে কলকাতার কিছু জায়গায় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামল। সকাল থেকেই কলকাতা ও শহরতলির আকাশ ছিল মেঘলা। তবে এদিন বেশি বৃষ্টি মূলত হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার কিছু এলাকায়। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে  বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৩৯ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। ভালো পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে আমহার্স্ট স্ট্রিট থেকে বড়বাজারের কিছু এলাকায়। এই সময়কালে শহরের  উত্তর তল্লাটে অবস্থিত দমদম-সল্টলেকেও বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে কলকাতা সংলগ্ন হাওড়াতেও। যদিও রাজ্যের অন্য কোনও এলাকায় এই সময়ে বৃষ্টি হওয়ার কোনও খবর জানায়নি আবহাওয়া দপ্তর। তারা জানিয়েছে, এদিন দুপুরের পর থেকেই কলকাতার পাশাপাশি হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম জেলার কোনও কোনও জায়গায় বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার হয়েছিল। রাজ্য থেকে বর্ষার আনুষ্ঠানিক বিদায়ের পর এই প্রথম কলকাতায় বৃষ্টি হল। 

    আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টি হয়ে রবিবার কোথাও কোথাও বৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে যে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে এর সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। তবে পরোক্ষ সম্পর্ক আছে।  ইতিমধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অতি গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তার প্রভাবে বায়ু প্রবাহের গতিপথ কিছুটা পরিবর্তিতও হয়েছে। আগে শুধু উত্তর দিক থেকে বাতাস আসছিল। এখন সেটা কিছুটা পূর্বমুখী হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের দিক থেকে আসা পুবালি বাতাসের সঙ্গে জলীয় বাষ্প কিছুটা বেশি মাত্রায় ঢুকতে শুরু করেছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় তা ঘনীভূত হয়ে মেঘ তৈরি হচ্ছে। কোথাও কোথাও জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বজ্রমেঘ থেকে বৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে যে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে, তাতে এবার দখিনা বাতাস সক্রিয় হয়ে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ আরও বাড়বে। তাই আগামী কয়েকদিন দক্ষিণবঙ্গের অন্যন্য জায়গার মতো কলকাতা ও শহরতলিতে বাড়বে বৃষ্টি। 

    আজ, সোমবার কলকাতা ও শহরতলিতে আবহাওয়া একই রকম থাকবে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া , হুগলি জেলার কোথাও কোথাও হাল্কা বৃষ্টি হতে পারে। বজ্রপাতের আশঙ্কা আছে। মঙ্গলবার ঘূণিঝড়টি অন্ধ্র উপকূলের কাছাকাছি  আসার কথা। তারপর সন্ধ্যা বা রাত নাগাদ স্থলভূমিতে ঢুকবে। এর প্রভাবে রাজ্যে, বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বাড়বে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় মঙ্গল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সেই তালিকায় কলকাতা না থাকলেও লাগোয়া দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া রয়েছে। তাই কলকাতার কোনও কোনও জায়গায় মঙ্গল-বুধবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছেন না আবহাওয়াবিদরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)