• ‘নাম আছে, ভোট দিয়েই বাংলায় ফিরব!’ ট্রেন ধরার লাইনে দাঁড়িয়ে জানাচ্ছেন বিহারের পরিযায়ী শ্রমিকরা
    বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: হাওড়া স্টেশনের ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরিয়ে গেল পাটনা রাজধানী এক্সপ্রেস। সেই প্ল্যাটফর্মেই মোটা ব্যাগ নিয়ে বসে রয়েছেন শত শত বিহারের পুরুষ-মহিলারা। ছটপুজোর সময় তাঁরা বাড়ি যান একমাসের জন্য। এবার আবার ভোট। তাই একেবারে ভোট দিয়েই কলকাতায় কাজে ফিরবেন। এবছর আবার সবার আগে এসআইআর। শেষপর্যন্ত এই পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম কি রয়েছে? হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনে দাঁড়িয়ে তাঁরা বললেন, ‘আমাদের নাম রয়েছে। একেবারে ভোট দিয়েই আসব।’ বিহারে কি ‘বদল’ হবে? মুখ খুলতে চান না তাঁরা। কেউ বলেন, ‘নীতীশই ভালো’ আবার কারও মুখে ‘বিহার বদল’-এর কথা। সব শেষে তাঁদের কথায়, ‘আগে বাড়ি যাই। তারপর দেখা যাবে।’ 

    প্রায় ৬ ঘণ্টা স্টেশনে লাইন দিয়ে মৈথিলি এক্সপ্রেসে ১২ ঘণ্টার যাত্রা করে মহম্মদ শামসের পৌঁছোবেন সমস্তিপুরে। স্টেশনে দাঁড়িয়ে বলছিলেন, ‘কলকাতায় প্রায় ১৫ বছর হয়ে গেল। আমি এখানে গয়নার কাজ করি।’ এসআইআর নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে? শামসের বলেন, ‘অনেক কথা হচ্ছে। আমার পরিবারের নাম তো রয়েছে।’ বিহারে কি বদল হবে এবার? শামসেরের পাশ থেকে মুজফফরপুরের মন্টু বলে উঠলেন, ‘সেটা বাড়ি গিয়ে বোঝা যাবে। ওখানকার আবহাওয়া কীরকম।’ যদিও শামসের কিন্তু স্মার্টফোনের দৌলতে সর্বক্ষণ ‘খবরে’ থাকেন। বলছিলেন, ‘অনেকেই তো বলছেন, নীতীশ কুমারই থাকবে। ১০ জন মিলে বললে কি ভুল বলবে?’ 

    তবে ভোট না দিয়ে তাঁরা কলকাতামুখী হবেন না। একথাও জানিয়ে দিলেন। হাওড়া স্টেশনের বাইরে ছাউনি করা হয়েছে রেলের তরফে। এক আরপিএফ কর্মীর কথায়, ‘খুব ভিড় হয়ে গেলে, আমরা এখানে হল্টের ব্যবস্থা করছি। তারপর লাইন দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’ এই ব্যবস্থা শিয়ালদহ স্টেশনেও দেখা গেল। স্টেশনের পার্কিংয়ে ছাউনির কাছেই টিকিট কেটে দিচ্ছেন রেলকর্মীরা। হাতে দেওয়া হচ্ছে টোকেন। সেই টোকেন নিয়ে যাত্রীরা দাঁড়াচ্ছেন পাখার তলায়। আরপিএফ কর্মীরা মাইকে ঘোষণা করছেন, ‘ট্রেন দিলেই আপনাদের নিয়ে যাওয়া হবে।’ এসব দেখে কেউ বলছেন, ‘ভোট বড়ো বালাই। তাই এত ব্যবস্থা।’ শিয়ালদহ স্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে সমস্তিপুরের লালরাম বাবু বলছিলেন, ‘কলকাতায় ১৫ বছর হয়ে গেল। লেদারের কারখানায় কাজ করি। এসআইআর নিয়ে ভাবছিলাম। কিন্তু তালিকায় নাম আছে। ভোট দিয়েই আসব।’

    কিন্তু এঁদের সাহায্যার্থে স্টেশন চত্বরে ডান-বাম কোনও দলের কর্মী-সমর্থকদের দেখা গেল না। সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক অভিজিত্ মজুমদার বলেন, ‘এখানকার শ্রমিকদের কাছে এসআইআর নিয়ে পৌঁছেছিলাম। কলকাতায় এখন কোনও কর্মসূচি নেই। তবে বিহারের বিভিন্ন স্টেশনে আমাদের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।’
  • Link to this news (বর্তমান)