যোগীরাজ্যে বাঙালি আদিবাসী শ্রমিকের দেহ উদ্ধার, খুনের অভিযোগ তৃণমূলের
বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও সিউড়ি: আবারও বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকের উপর নির্মম অত্যাচারের ঘটনা ঘটল বিজেপিশাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশে। তৃণমূলের অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে। পরিবারেরও অভিযোগ, তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে।
রবিবার তৃণমূলের তরফে একাধিক ছবি ও ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, কানপুরে এক বাঙালি আদিবাসী পরিযায়ী শ্রমিককে দিল্লি-কানপুর রেললাইনে নির্মমভাবে ‘খুন’ করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গোবিন্দনগর থানা থেকে সামান্য দূরে। যদিও মৃত্যুর কারণ নিয়ে সবদিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মৃতের নাম পথিক হেমব্রম। তাঁর বাবার নাম গোপাল হেমব্রম। তিনি বীরভূমের বাসিন্দা ছিলেন। পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে সেখানে কাজ করতেন। তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে তৃণমূল বলেছে, গোটা দেশটাকেই বাঙালিদের জন্য বসবাসের অযোগ্য করে তোলার মিশনে নেমেছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজে বাঙালিদের উপর নিপীড়নকে এখন যেন রাজ্য-রাজনীতির অংশ করে তোলা হয়েছে। বিজেপির ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে অন্যায়ভাবে বাঙালি নিপীড়ন এখন শুধুমাত্র আটক করা কিংবা দেশছাড়া করাতেই থেমে নেই, এখন সেটা হত্যার পর্যায়েও পৌঁছেছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে কানপুরে পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দল পাঠাতে চলেছে তৃণমূল। ওই পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। গত কয়েকমাসে একাধিক মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে। দেখা গিয়েছে, বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার হয়েছে। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে, হরিয়ানা, মুম্বই-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে এসব তথ্য সামনে এসেছিল।
ঘটনার তদন্তের দাবী জানিয়েছে যুবকের পরিবার। মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ ফেরানোর সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশের কানপুরের গোবিন্দপুর থানা এলাকায় রেল লাইনের পাশ থেকে যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে সেখানকার পুলিশ। তারপরেই খবর দেওয়া হয় বীরভূম জেলা পুলিশকে। যুবকের পরিবার সূত্রের খবর, কাজের সন্ধানে গত মাঘ মাসে চেন্নাইয়ে পাড়ি দেয় ওই যুবক। তবে সেখানে অত্যন্ত কম টাকা মাইনে ছিল। তাই বেশি টাকা মাইনের আশায় বেঙ্গালুরুতে যান যুবক। তবে, গত ২১ অক্টোবর ওই যুবক তাঁর বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা বোনকে ফোন করে জানান, এখানেও মাইনে ভালো দিচ্ছে না। তাই সে চেন্নাইয়ে ফেরত যাচ্ছে। মৃতের স্ত্রী শর্মিলা হেমব্রম বলেন, আমার সঙ্গে ২২ তারিখ বিকালে কথা হয়। তার আগে আমি অনবরত ফোন করছিলাম। ও ফোন তুলছিল না। তারপর ফোন তুললে, ভয়ে ভয়ে কথা বলছিল। কিন্তু কী কারণে, তা এড়িয়ে যায়। তারপর ওর ফোনও বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার মধ্যরাতে পুলিশ এসে আমাদের ঘটনার কথা জানায়। মৃতের স্ত্রী বলেন, আমরা স্বামীকে খুন করা হয়েছে। আমরা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, এটা কোনও দুর্ঘটনা নয়, স্পষ্ট খুন।