রাস্তায় জুয়ার ঠেকের প্রতিবাদ করে আক্রান্ত বারাসত কোর্টের আইনজীবী
বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর ও বারাসত: প্রকাশ্য রাস্তায় চলছিল জুয়ার ঠেক। তার প্রতিবাদ করে আক্রান্ত হলেন বারাসত আদালতের এক আইনজীবী। কালীপুজোর রাতে বারাসত শহরেই ঘটেছে এই ঘটনা। ওই আইনজীবী চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার রাতে বারাসত থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
বারাসত আদালতের আইনজীবী সুশান্ত কুণ্ডু। ২০ অক্টোবর কালীপুজোর রাতে তিনি টাকি রোড ধরে বিধান পার্কের বাড়িতে ফিরছিলেন। তখনই তিনি লক্ষ্য করেন, রাস্তার ঠিক পাশে কয়েকজন জুয়ার বোর্ড চালাচ্ছেন। প্রকাশ্য রাস্তায় জুয়ার ঠেক চলায় তিনি প্রতিবাদ জানান। এনিয়ে দুই পক্ষের বচসা শুরু হয়। এরপর জুয়ার বোর্ডের কারবারিরা তাঁকে ঘিরে ধরে। আইনজীবীর দাবি, তাঁর কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। তিনি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতেই তাঁরা আচমকা হামলা চালান। তাঁকে এলোপাথাড়ি কিল-চড়, লাথি-ঘুসিও মারা হয়। তাঁর গলায় থাকা সোনার চেন ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। আক্রান্তকে বাঁচাতে এলাকাবাসীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা চম্পট দেয়।
এরপর আক্রান্ত ওই আইনজীবীকে বারাসত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার রাতে তিনি বারাসত থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের প্রতিলিপি তিনি বারাসত জেলার পুলিশ সুপার, মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের কাছেও পাঠিয়েছেন। সুশান্তবাবু বলেন, ওই এলাকায় জুয়ার ঠেকের দৌরাত্ম্য দিনদিন বাড়ছে। পুলিশ মাঝে মধ্যে অভিযান চালায়। কিন্তু তারপর একইভাবে ঠেক চলতে থাকে। আমি চাই পুলিশ প্রশাসন জুয়ার ঠেক বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ নিক। বারাসত জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) অতীশ বিশ্বাস বলেন, তদন্ত করে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।
অন্যদিকে, শনিবার রাতভর বেশ কয়েকটি জুয়ার আসরে অভিযান চালিয়ে মোট ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বারাকপুর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। বেলঘরিয়া থানা এলাকায় জুয়ার ঠেকে হানা দিয়ে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। ওই আসর থেকে মোট ৬৩ হাজার ৩৩০ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। একইভাবে বরানগরে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দারা মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেন। সেখান থেকে মোট ৬১ হাজার ৩৬৫ টাকা উদ্ধার করা হয়। ঘোলা থানা এলাকাতেও অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মোট ১৪ হাজার ২৭০ টাকা উদ্ধার হয় সেখানে। পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা বলেন, আগামী দিনে এমন অভিযান আরও চলবে।