নিয়মের গেরো়য় ড্রেজিং শুরুই করা যাচ্ছে না রবীন্দ্র সরোবরের, গ্রিন ট্রাইবিউনালের দ্বারস্থ কেএমডিএ
বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পলি জমে জমে রবীন্দ্র সরোবরের অনেক অংশে গভীরতা কমে গিয়েছে। এনিয়ে পরিবেশকর্মীদের রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে সরোবরের কোথায় গভীরতা কতটা, তা পর্যাপ্ত কি না, কোথায় কতটা পলি তোলা প্রয়োজন, তা বুঝতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে সমীক্ষা করিয়েছে কেএমডিএ (কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি)। শব্দতরঙ্গ প্রযুক্তি ব্যবহার করে গভীরতা মাপা হয়েছে। সেই রিপোর্ট ইতিমধ্যে জমাও পড়েছে। পাশাপাশি, গ্রিন ট্রাইবিউনালে হওয়া মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানেও যাদবপুরের রিপোর্ট জমা দিয়েছে কেএমডিএ। এ পর্যন্ত সবটাই ছিল ঠিকঠাক। গোল বেধেছে তারপর! কারণ, ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবিউনালের নির্দেশ মতো সরোবরের ভিতরে পেট্রল বা ডিজেল চালিত মেশিন ব্যবহার করা যাবে না। তাহলে রবীন্দ্র সরোবরে ড্রেজিং বা পলি তোলা কীভাবে সম্ভব? এই অবস্থায় পলি তোলার কাজ কীভাবে করা যাবে, সেই সমাধানসূত্র পেতে ট্রাইবিউনালের দ্বারস্থ হচ্ছে কেএমডিএ।
পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, সরোবরের গভীরতা কমে যাওয়ায় গরম কালে অনেক সময় জল শুকিয়ে গিয়ে চরের দেখা মেলে। সেই সঙ্গে সরোবরের মাছ সহ হরেক জলজ প্রাণী, জীব বৈচিত্র্যের উপর প্রভাব পড়ে। উল্লেখ্য, ৭৩ একর জায়গাজুড়ে থাকা রবীন্দ্র সরোবর ২০০৩ সালে জাতীয় সরোবরের মর্যাদা পায়। সব মিলিয়ে এই সরোবর চত্বরে ৭৫টি প্রজাতির গাছ রয়েছে। জলজ প্রাণী রয়েছে ১২টির বেশি প্রজাতির। বহুদিন ধরেই সরোবর ড্রেজিংয়ের দাবি জানিয়ে আসছেন পরিবেশকর্মীরা। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়েই সমীক্ষা করায় কেএমডিএ। এ প্রসঙ্গে কেএমডিএ’র এক কর্তা বলেন, ‘লেকের বিভিন্ন দিকে ধার বরাবর সাত থেকে আট ফুট গভীরতা রয়েছে। মধ্যবর্তী স্থানে ২০ কুড়ি ফুট মতো গভীর। কিন্তু এটা আমাদের একটা ধারণা মাত্র। তাই সম্পূর্ণ বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষা করানো হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে রবীন্দ্র সরোবরের কিছু কিছু অংশে গভীরতা কমে গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে ড্রেজিং প্রয়োজন। গোটা লেকের পলি তুলতে হবে না। কিন্তু, সেই কাজ মানুষ নামিয়ে করা সম্ভব নয়। তার জন্য পেট্রোল কিংবা ডিজেল চালিত মেশিন ব্যবহার করতে হবে। পাম্প লাগাতে হবে। কিন্তু গ্রিন ট্রাইবিউনালের নির্দেশ অনুযায়ী সরোবরের ভিতরে সেটা করা যাবে না। তাই আমরা বলেছি, অন্তত ড্রেজিংয়ের জন্য পেট্রোল বা ডিজেল ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হোক।’
ওই কর্তা আরও জানান, কয়েকজন পরিবেশকর্মীই রবীন্দ্র সরোবরের গভীরতা কমে যাওয়া নিয়ে গ্রিন ট্রাইবিউনালে মামলা করেছিলেন। তাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্ট ট্রাইবিউনালেও জমা দেওয়া হয়েছে। এখন কীভাবে পলি তোলা হবে, তা ট্রাইবিউনাল থেকে বলে দিলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। ফাইল চিত্র