মহারাষ্ট্রের তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুকে ঘিরে ক্রমশ রহস্য ঘনাচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন মূল অভিযুক্ত সাব ইনস্পেক্টর গোপাল বাদনে ও বাড়ির মালিকের ছেলে প্রশান্ত বাঙ্কার। এর মধ্যে এই ঘটনায় নতুন একটি তথ্য সামনে এল। সাতারা জেলার এক গ্রামের বাসিন্দা ভাগ্যশ্রী মারুতি পাচাংনে অভিযোগ করেছেন, ওই তরুণী চিকিৎসক তাঁর মেয়ের ভুয়ো ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
ভাগ্যশ্রীর দাবি, তাঁর মেয়ে দীপালি মারুতির মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সেই বিষয়টি গোপন করা হয়েছে। ভাগ্যশ্রীর অভিযোগ, ওই তরুণী চিকিৎসককে রিপোর্ট পাল্টে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। জানা গিয়েছে, দীপালি মারুতি ছয় মাসের অন্তঃসত্বা ছিলেন। তাঁর একটি দেড় বছরের কন্যাসন্তান রয়েছে। একজন সেনা অফিসার অজয়ঙ্ক হনমন্ত নিম্বালকারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। ভাগ্যশ্রীর দাবি, বিয়ের পর থেকেই তাঁর মেয়ের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা দীপালিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।
ভাগ্যশ্রী জানিয়েছেন, দীপালি গত ১৯ অগস্ট আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁকে জানানো হয়। এ দিকে ভাগ্যশ্রী জোর দিয়ে বলেছেন, ‘আমার মেয়ে এটা করতে পারে না। আমি মনে করি তাকে খুন করা হয়েছে।’ ভাগ্যশ্রীর অভিযোগ, দীপালির মৃত্যুর পাঁচদিন পরেও পুলিশ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেয়নি। অজয়ঙ্ক নিম্বালকার তাঁর রাজনৈতিক ও পুলিশি ক্ষমতা ব্যবহার করে ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ওই তরুণী চিকিৎসক হাতের তালুতে যে অভিযুক্তদের নাম লিখে রেখে গিয়েছিলেন তাঁদেরকে ইতিমধ্যেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। সূত্রের খবর, এর পাশাপাশি একটি চার পাতার চিঠিও উদ্ধার হয়েছিল। তা ‘সুইসাইড নোট’ বলে দাবি করা হয়। আরও দাবি করা হয়, ওই সুইসাইড নোটে একজন সাংসদের কথাও উল্লেখ রয়েছে। তাঁকে অনৈতিক কাজ করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন ওই সাংসদ, অভিযোগ এমনটাই। মৃত চিকিৎসকের অভিযোগ, ওই সাংসদের দুই সহকারীকে তিনি ভুয়ো সার্টিফিকেট দিতে অস্বীকার করেছিলেন।
ফলটনের একটি সরকারি হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন ওই তরুণী। গত ২৩ অক্টোবর হোটেলের রুম থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। আত্মঘাতী হওয়ার আগে বাঁ হাতের তালুতে সুইসাইড নোট লিখেছিলেন তিনি। সেখানে দু’জনের নাম এবং তাঁদের অত্যাচারের কথাও উল্লেখ করেছিলেন। তরুণী চিকিৎসকের অভিযোগ ছিল, গত পাঁচ মাস ধরে তাঁর উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন প্রশান্ত। ফলটনে যে বাড়িতে তিনি ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধেও হেনস্থার অভিযোগ তুলে তাঁর নাম হাতে লিখে যান তরুণী।