এই সময়, মালদা: মহাভারতে মহাপ্রস্থানের সময়ে যুধিষ্ঠিরকে স্বর্গের পথ দেখিয়েছিল একটি কুকুর। মানুষ নয়, প্রথম বার চাঁদে পা রাখে একটি সারমেয়ই। যুগ যুগ ধরে কুকুর মানুষের আস্থাভাজন হয়ে থেকেছে। তার আরও একটি প্রমাণ মিলল মালদার সীমান্ত এলাকায়। বাংলাদেশ থেকে রাতের অন্ধকারে উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন দুই যুবক। সবার চোখে ধুলো দিলেও সারমেয়দের নজর এড়াতে পারেননি। প্রায় আধ কিলোমিটার দু'জনের পিছু ধাওয়া করে কুকুরের দল। সঙ্গে ঘেউ ঘেউ চিৎকার। আর তাতেই পুলিশের নজর যায় দুই যুবকের দিকে। শেষমেশ বকলমে সারমেয়দের প্রচেষ্টায় পুলিশের জালে ধরা পড়লেন দুই বাংলাদেশি।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে মহদিপুরে কাঁটাতারবিহীন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে বিএসএফের ঘেরাটোপ পেরিয়ে দুই বাংলাদেশি যুবক অবৈধ ভাবে এ পারে আসেন। কিছুটা রাস্তা অবাধে আসার পরে শহরের রাস্তায় মুখে আসতেই একদল পথকুকুর তাঁদের তাড়া করে। আধ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা পেরনোর পরে ইংরেজবাজার থানার মহদিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সুস্থানি মোড় এলাকায় পৌঁছতেই কুকুরদের চিৎকার কানে পৌঁছয় পুলিশের। রাস্তায় আসতেই হাতেনাতে ধরা পড়ে যান দু'জন। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশের দাবি, দুই যুবক তখনই স্বীকার করেন যে, তাঁরা অবৈধ ভাবে কাঁটাতার পেরিয়ে ভারতে ঢুকেছেন। তখনই দু'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ধৃত ত্রিশ বছরের মহম্মদ রাসেল মিয়া এবং চব্বিশ বছরের মহম্মদ রিফাতের বাড়ি বাংলাদেশের রংপুরের হাজিপুর এলাকায়। ধৃতদের দাবি, মালদায় তাঁদের পরিচিত এক জন ভিন রাজ্যে ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে এ দেশে আসার প্রস্তুতি সেরে ফেলেন। তার পরেই এই ঘটনা। সুস্থানি মোড়ে পুলিশের টলহদারি বেশি। রাতে ইংরেজবাজার থানার একজন সাব-ইনস্পেক্টর টহল দিচ্ছিলেন। তাঁরাই কুকুরদের চিৎকার শুনে এগিয়ে এসে দেখেন, দুই যুবক ছুটছেন। ধৃতদের রবিবার মালদা আদালতে পেশ করা হলে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, 'কী উদ্দেশ্য নিয়ে দুই বাংলাদেশি যুবক এ পারে এসেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।'