তৃণমূলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে নার্সদের ধমকানোর নালিশে তরজা
আনন্দবাজার | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
এ বার হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্সদের ধমক দেওয়ায় অভিযোগের আঙুল উঠল তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের দিকে। শুক্রবার এক রোগীর মৃত্যুতে নার্সদের গাফিলতির অভিযোগে তেতে উঠেছিল ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল। সেখানে ওই হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা ইসলামপুরের পুরপ্রধান কানাইয়ালালের কথোপকথনের ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে। কানাইয়ালাল অভিযোগ মানেননি। তবে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকান্ত বিশ্বাস এ বিষয়ে শনিবার বলেন, ‘‘চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ নেই। তবে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে বলে শুনেছি। কী ঘটেছে, তা ইসলামপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানাতে বলা হয়েছে।’’ ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালের সহকারী সুপার সন্দীপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে নার্সদের কাছে বিষয়টি শুনেছি। সোমবার এ ব্যাপারে আলোচনা হবে।’’
বুধবার রাতে পেটে ব্যথা ও বমির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন স্থানীয় ক্ষুদিরামপল্লির বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নর প্রণয় দত্ত। পরদিন ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। শুক্রবার ভোরে অবস্থার অবনতি হলে, তাঁকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করান বাড়ির লোক। অভিযোগ, রোগী দেখে ডাক্তার যে ইঞ্জেকশন দিতে বলেন, তা দেওয়া হয়নি। শুক্রবার বিকেলে রোগীর মৃত্যুর পরে, উত্তেজনা ছড়ায়। কানাইয়ালালের দাবি, রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হিসাবে রোগী ঠিকঠাক পরিষেবা পেয়েছেন কি না জানতে হাসপাতালে যান।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ইঞ্জেকশন কেন দেওয়া হয়নি জানতে প্রথমে নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন পুরপ্রধান। সে সময় সেখানে হাজির হন হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সিং ইন-চার্জ। তাঁর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় কানাইয়ালালের। নার্সিং-ইন-চার্জ রেখা বেরার দাবি, ‘‘কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের প্রশ্ন নেই। উনি কোনও কথা না শুনে সব নার্সদের ধমকাচ্ছিলেন। আমাকেও ধমকেছেন। উনি যদি কোথাও অভিযোগ জানাতে চান, জানাতে পারেন।’’ যদিও কানাইয়ালাল বলেন, ‘‘কর্তব্যরত ওই নার্সের কাছে গাফিলতির অভিযোগের বিষয়টি জানতে চাওয়ায়, তিনি তর্ক জোড়েন। তাঁকে থামতে বলেছিলাম। ধমকানোর ব্যাপার নেই।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিকাশ দাস বলেন, ‘‘কানাইয়ালাল রোগীকল্যাণ সমিতির দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান। বার বার অভিযোগ এসেছে হাসপাতালের পরিষেবা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহার নিয়ে। তখন ব্যবস্থা না নিয়ে এখন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে ধমকানো উচিত নয়।’’ কানাইয়ালালকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেনের কটাক্ষ, ‘‘এ সব ভোটের আগের চমক।’’ পক্ষান্তরে, শহর তৃণমূলের ইসলামপুরেরসহ-সভাপতি বিক্রম দাসের দাবি, ‘‘পুরপ্রধানের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে।’’