অশনি সঙ্কেত! দ্রুত গতিতে আসছে ঘূর্ণিঝড় মান্থা, টানা চার দিন ভারী বৃষ্টি বাংলায়, মৎস্যজীবীদের জন্যেও সতর্কতা ...
আজকাল | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার ভোররাতেই অতি গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মান্থা দক্ষিণ পশ্চিম, দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে চলেছে। গত ছ'ঘণ্টায় ১৫ কিমি/ঘণ্টা গতিবেগে অগ্রসর হচ্ছে এটি। তামিলনাড়ু থেকে ৫৬০ কিমি পূর্ব - দক্ষিণ পূর্বে, অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া থেকে ৬২০ কিমি দক্ষিণ - দক্ষিণ পূর্বে, বিশাখাপত্তনম থেকে ৬৫০ কিমি দক্ষিণ - দক্ষিণ পূর্বে, ওড়িশার গোপালপুর থেকে ৭৯০ কিমি দক্ষিণে, পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৮১০ কিমি পশ্চিমে রয়েছে।
মঙ্গলবার সকালেই মধ্যে মান্থা অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। আগামী ১২ ঘণ্টায় এটি এগিয়ে যাবে উত্তর পশ্চিম দিকে। আগামিকাল সকালেই আরও শক্তি বাড়াবে এই ঘূর্ণিঝড়। মৌসম ভবন আরও জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল মছলিপত্তনাম - কলিঙ্গপত্তনাম (কাকিনাড়ার কাছে) দিয়ে বয়ে যাবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থা। সেই সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিমি হতে পারে। সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ১১০ কিমিও হতে পারে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া এবং মছলিপত্তনম উপকূলের মধ্যে কোনও একটি জায়গায় ল্যান্ডফল হবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থার। এর জেরে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে সমুদ্র থেকে মৎস্যজীবীদের ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আজ, সোমবার কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামিকাল মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে। এই দুই জেলায় হলুদ সর্তকতা জারি রয়েছে। পাশাপাশি কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এই জেলাগুলিতেও হলুদ সর্তকতা রয়েছে।
আগামী বুধবার ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা জারি রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে। দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি, ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। সব জেলায় জারি রয়েছে হলুদ সর্তকতা।
আগামী বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা রয়েছে পুরুলিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। আগামী শুক্রবার বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি রয়েছে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি, দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া জেলায়। আগামী শনিবার কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী রবিবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে।
আগামী মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর থেকে বৃহস্পতিবার ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় ৫৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তাল থাকবে সমুদ্র। এই তিনদিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যে সমুদ্র থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে আজ উত্তরবঙ্গের সব জেলায় শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে। মঙ্গলবার শুধুমাত্র দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। আগামী বুধবার জলপাইগুড়ি, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি, ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারার সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামী বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা রয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরে। বাকি জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। আগামী শুক্রবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি রয়েছে। মালদহ, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টির হলুদ সর্তকতা রয়েছে। আগামী শনিবার ও রবিবার উত্তরবঙ্গের সব জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে।