উত্তরপ্রদেশে গ্রামে গ্রামে আসছে পরিবর্তন, নেপথ্যে কারা?
প্রতিদিন | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
হেমন্ত মৈথিল, লখনউ: উত্তরপ্রদেশের গ্রামগুলি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষ এখন নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করছেন। কৃষি, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং স্বাস্থ্য উদ্যোগে এই অগ্রগতি স্পষ্ট। আলিগড়ের ভরতপুর গ্রামে বর্জ্য পদার্থ অর্থনীতির মূল সম্বল। এর কৃতিত্ব তাপ্পাল সমৃদ্ধি মহিলা কিষান প্রোডিউসার কোম্পানি লিমিটেডের (FPO)। দুই বছরে এটি ‘লাইটহাউস এফপিও’ খেতাব পেয়েছে। এই FPO-তে ১,০০০-এর বেশি মহিলা কৃষক যুক্ত রয়েছেন। নীলম দেবীর উদ্যোগে পঞ্চায়েতের জমিতে জৈব সারের ইউনিট তৈরি হয়েছে। মহিলারা গোবর ও ফসলের উচ্ছিষ্ট থেকে আইআইটি কানপুরের প্রযুক্তিতে জৈব সার তৈরি করছেন। এতে কম খরচে ফলন বেড়েছে। পঞ্চায়েতও নিয়মিত ভাড়া পাচ্ছে।
মির্জাপুরে, ৩৩ বছর বয়সী চন্দা শুক্লা ই-রিকশা চালিয়ে স্বনির্ভর হয়ে উঠেছেন। প্রজ্ঞা দেবীর অনুপ্রেরণায় তিনি ঋণ নিয়ে রিকশা কেনেন এবং প্রশিক্ষণ নেন। প্রথমে মুখ ঢেকে রিকশা চালালেও, ধীরে ধীরে তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়ে। দু’বছরের মধ্যে তিনি ঋণ পরিশোধ করেন। তিনি এখন ১০০ জনেরও বেশি মহিলাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আর্য মহিলা গ্রুপ চালাচ্ছেন।
হারদোই-এর বাঘরই গ্রামের ২৫ বছর বয়সী কৃষক হিমাংশু যাদব ব্যক্তিগত অসুস্থতাকে সামাজিক সচেতনতায় বদলে দিয়েছেন। ফাইলেরিয়া ওষুধ খাওয়ার পর তিনি অসুস্থ হন। কিন্তু প্রশিক্ষণের কারণে সময়মতো চিকিৎসা নিয়ে তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। তাঁর এই অভিজ্ঞতা গ্রামে সাহস জুগিয়েছে। তিনি নিজে ১৩০ বারেরও বেশি ‘নাইট চৌপাল’-এর মাধ্যমে ওষুধ বিতরণ করেছেন।
আমেথিতে অনিতা দেবী (৩২) একজন সফল ‘বিসি সখী’। ঘরে ঘরে গিয়ে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু করেন। তাঁর উদ্যোগে ১,১০০-এর বেশি গ্রামবাসী ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। বর্তমানে তাঁর মাসিক আয় প্রায় ২৫,০০০ টাকা। কাজের জন্য তাঁর স্বামীকে আর শহরমুখী হতে হয়নি। এই গ্রামবাসীরা প্রমাণ করছেন, নিজেদের ক্ষমতায়নই রাজ্যের আসল অগ্রগতি।