‘ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দিতে বলব’, রাজ্যকে চরম হুঁশিয়ারি কলকাতা হাই কোর্টের
প্রতিদিন | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
গোবিন্দ রায়: হাই কোর্ট ও নিম্ন আদালত রক্ষণাবেক্ষণ ও নির্মাণ কাজে বরাদ্দের বাকি টাকা আদায়ে মরিয়া কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারক মহম্ম শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে মামলা। সেই মামলায় রাজ্যের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার অ্যাকাউন্ট নম্বর চায় হাই কোর্ট। রাজ্যের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার হুঁশিয়ারি দিল হাই কোর্ট। পরবর্তী শুনানিতে মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবকে সশরীরে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে মামলার শুনানিতে রাজ্যের অনুরোধ মেনে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন পুজোর ছুটির মধ্যে ১৫ অক্টোবর অর্থসচিব, জুডিশিয়াল সেক্রেটারি ও হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল হাই কোর্টে বৈঠকে বসার নির্দেশ দেয়। সেদিন কাজ পুরো শেষ না হলে ফের ২২ অক্টোবর বৈঠক করে সব হিসেবনিকেশ বুঝে টাকা অনুমোদনের বিষয়ে রাজ্যকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়। সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিবকে হাই কোর্টে রিপোর্ট দিতে বলে। আদালতের স্পষ্ট সতর্কতা, মুখ্যসচিব মানে, মুখ্যসচিবকে ওই রিপোর্ট দিতে হবে। এর যেন কোনও অন্যথা না হয়। তবে এদিনও কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি রাজ্য।
এদিন রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি দেবাংশু বসাক বলেন, “গত ৩ বছর ধরে বিএসএনএলের বিল বকেয়া। তিন বছর যথেষ্ট সময়। বিল দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। বিএসএনএল পরিষেবা বন্ধ করে দিলে কিছু বলার থাকবে না। রাজ্যের কর্মীদের সঠিকভাবে বেতন দিচ্ছেন না। হাই কোর্টের কাজে অর্থবরাদ্দ কি প্রশাসনের কাজের মধ্যে পড়ে না? আমরা রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে বলছি কোনও টাকা না ছাড়তে। আদালতের অনুমতি ছাড়া যেন কোনও টাকা ছাড়া না হয়।” এদিনের শুনানিতে রাজ্যের অর্থদপ্তরের আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি রাজ্যের অ্যাকাউন্ট নম্বর জেনে বলতে বলেন। উত্তরে আধিকারিক জানান তাঁর অ্যাকাউন্ট নম্বর জানা নেই। মুখ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে তড়িঘড়ি অ্যাকাউন্ট নম্বর দিতে বলেন বিচারপতি। আগামী দু’দিনের মধ্যে রাজ্য সরকার অর্ধেক টাকা মিটিয়ে দেবে বলে জানান ওই আধিকারিক। তিনি বলেন, “কেন দু’দিন সময় লাগবে? এখন তো সবসময় টাকা রাখা যায়।” আধিকারিক জানান আজ ছুটি বলে তিনি দিতে পারবেন না। তাতে আরও ক্ষোভপ্রকাশ করে বিচারপতি বলেন, “ছুটি? ইন্টারনেটের কি ছুটি? আদালত কি ছুটিতে? আজ যদি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়, কী হবে?” এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১০ নভেম্বর।