যেখানে সেখানে কুকুরের প্রস্রাবে নাজেহাল বাসিন্দারা! পাটুলির অভিজাত আবাসনে তুলকালাম
প্রতিদিন | ২৭ অক্টোবর ২০২৫
অভিরূপ দাস: দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত আবাসনে কুকুরকে প্রস্রাব করানো নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড। কুকুরের মালিক চিকিৎসক দীপঙ্কর রায়ের অভিযোগ, কুকুর নিয়ে হাঁটতে বেরোলে আবাসনের একাধিক বাসিন্দা তাঁকে এবং তাঁর মেয়েকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেছেন। ঘটনায় এফআইআর দায়ের হয়েছে পাটুলি থানায়। আবাসনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনও হেনস্তা হয়নি। আবাসনের কোনও নিয়মই মানছেন না দীপঙ্কর রায়।
বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, আবাসনের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় শিশুরা খেলাধুলা করে। ফুলের বাগান রয়েছে। সেখানে পোষ্যদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। বারবার বলা সত্ত্বেও সেকথা কানে তুলছেন না দীপঙ্করবাবু। অবস্থা এমনই জায়গায় পৌঁছয় যে রবিবার গড়িয়ার ওই আবাসনে আসেন অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়। পোষ্যদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে কাজ করে এমন একটি সংগঠনের অধিকর্তা তিনি। অভিনেত্রী সেখানে আসতে পরিস্থিতি চরমে ওঠে। আবাসনের বাসিন্দারা তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, আবাসনের কোনও নিয়ম মানছেন না দীপঙ্করবাবু। যত্রতত্র পোষ্যকে মলমূত্র ত্যাগ করাচ্ছেন তিনি।
যদিও ওই গোল্ডেন রিট্রিভারের মালিক দীপঙ্কর রায় জানিয়েছেন, কুকুরকে আমি রাস্তায় নিয়ে প্রস্রাব করাই। কুকুরকে যখন হাঁটাতে নিয়ে যাই সঙ্গে ময়লার ব্যাগ রাখি। আমার পোষ্য কোথাও নোংরা করলে সঙ্গে সঙ্গে তা প্লাস্টিকে ভরে নিই। যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা সর্বৈব মিথ্যে। শহরের অন্যান্য আবাসনের মতো ওয়েস্ট উইন্ড আবাসনেরও একটি রুলবুক রয়েছে। আবাসনের রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা তা সামনে এনে জানিয়েছেন, “স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে, গার্ডেন এরিয়াতে পোষ্য নিয়ে যাওয়া যাবে না। সেই নিয়ম লঙ্ঘন হচ্ছে।” যদিও এই নিয়মকেই বেআইনি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক দীপঙ্কর রায়। ষাটোর্ধ্ব দীপঙ্করবাবুর কথায়, দেশের অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী এরকম আবাসনের একজন বাসিন্দা তাঁর পোষ্যকে নিয়ে যেখানে খুশি যেতে পারেন। এখানে বাগান সংলগ্ন রাস্তাতেও কুকুরের হাঁটা বারণ! এই আবাসনের বাসিন্দারা মান্ধাতার আমলের একটা নিয়মকে রুলবুকে ঢুকিয়ে রেখেছেন।
দীপঙ্করবাবুর দাবি, আমি বহুবার রেসিডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদককে বলেছি, ওই আইন মুছে ফেলুন। দীপঙ্করবাবুর বক্তব্য, “সাধের গোল্ডেন রিট্রিভার নিয়ে আবাসন চত্বরে পায়চারি করায় আমায় হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। আমার বয়স ষাট পেরিয়ে গিয়েছে। হার্টের সমস্যা আছে। তার মধ্যে আমাকে প্রায়ই হুমকি দিচ্ছে আবাসনের কয়েকজন। আমার পঁচিশ বছরের মেয়েকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। গোটা বিষয়টি ডিসি সাউথকে জানিয়েছি। অভিযোগ হয়েছে পাটুলি থানায়।” অভিযোগ, থানার পুলিশ তদন্তে এলে সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে পারেনি আবাসনের রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, যে জায়গায় হাতাহাতি হয়েছে সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা কাজ করে না। দীপঙ্করবাবুর কথায়, সাড়ে তিনশো ফ্ল্যাট। গাদাগুচ্ছের মেন্টেন্যান্স ফি দিচ্ছি। তারপরেও সিসিটিভি ক্যামেরা খারাপ! নিরীহ কুকুর নিয়ে চিল্লানোর আগে সেগুলো ঠিক করুক কর্তৃপক্ষ।