জুনিয়র কর্মীকে যৌন নির্যাতন, ব্ল্যাকমেল! সত্য ফাঁস হতেই গ্রেপ্তার সরকারি কর্মী, ঘটনা ঘিরে তোলপাড় এই রাজ্যে...
আজকাল | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: অরুণাচল প্রদেশে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। এক সরকারি আধিকারিককে যৌন হেনস্থার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ সোমবার নাহারলাগুন থানায় নিজেই আত্মসমর্পণ করেন ওই আধিকারিক। এর পরেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। খবর অনুযায়ী ১৯ বছর বয়সী গমচু ইয়েকারকে যৌন হেনস্থা করেন তিনি। পাশাপাশি আর এক সরকারি কর্মী লিকওয়াং লোওয়াংয়ের আত্মহত্যার জন্যেও তাঁকে দায়ী করা হয়।
জানা গিয়েছে, ইয়েকারের লেখা সুইসাইড নোটে পোতম ও লোওয়াংয়ের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ছিল। এই ঘটনার পরই ইয়েকারের বাবা তাগোম ইয়েকার, ওই দুই সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, প্রথমে পোতম একটি বিবৃতি দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ 'ভিত্তিহীন' বলেছেন এবং অস্বীকার করেছেন। খবর অনুযায়ী, গত ২৩ অক্টোবর সকালে ইয়েকার আত্মহত্যা করেন।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত 'পাবলিক ওয়ার্ক' বিভাগে কর্মী হিসাবে কাজ করতেন। ইয়েকার তাঁর নোটে জানিয়েছিলেন, পোতম যখন ইটানগরের ডেপুটি কমিশনার (২০২১ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে) ছিলেন, তখন তিনি তাঁকে এই চাকরিটি দেন। ইয়েকারের সুইসাইড নোটে আরও উল্লেখ ছিল যে, যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর তিনি এইচআইভি-তে আক্রান্ত হন। এরপর অভিযুক্ত আধিকারিকরা তাঁকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করেন।
নোটে ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে তাঁরা ১ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা দেননি। উল্টে তাঁরা ইয়েকারকে 'তাঁর জীবন নষ্ট করে দেওয়ার' হুমকিও দিতেন। পুলিশ জানিয়েছে, ইয়েকার ও লোওয়াং উভয়েরই ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ইয়েকারের এইচআইভি পরীক্ষাও করা হয়। বর্তমানে এই পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা চলছে। জানা গিয়েছে সুইসাইড নোটে লোওয়াংয়ের নাম আসার পরই লোওয়াং নিজেকে গুলি করে আত্মঘাতী হন।
প্রসঙ্গত, ৫৩ বছর বয়সী অভিযুক্ত পোতম দিল্লি সরকারের 'পাবলিক ওয়ার্ক' বিভাগের বিশেষ আধিকারিক ছিলেন। এদিকে, ইয়েকার তাঁর নোটে পোতম ও লোওয়াংয়ের বিরুদ্ধে বড়সড় দুর্নীতি ও অন্যান্য 'অনৈতিক কার্যকলাপের' সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগও করেন। এই ঘটনায় ইয়েকারের পরিবার এখন ন্যায্য বিচারের দাবিতে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ শুরু করেছে। ঘটনার জেরে রাজধানীর বেশ কিছু অংশে ইতিমধ্যেই চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, ইয়েকারের দেহ তাঁর ভাড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়। এক প্রতিবেশী দেখেন দরজা খোলা। সেই সময়ে ভিতরে তাঁকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান তিনি। এরপর ঘটনা জানাজানি হয়। বর্তমানে ইটানগরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কেঙ্গো ডিরচির নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল এই মামলার তদন্ত করছে।