আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার সকাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য ছিল, ঘূর্ণিঝড় মান্থা দক্ষিণ পশ্চিম, দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে চলেছে। গত ছ'ঘণ্টায় ১৫ কিমি/ঘণ্টা গতিবেগে অগ্রসর হয়েছিল এটি। সোমবার বিকেলে হাওয়া অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য, গতিবেগ আরও বাড়িয়েছে ঘূর্ণিঝড় মান্থা। ১৫-এর বদলে ঘণ্টায় ১৭ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। কমছে দূরত্বও। ঘূর্ণিঝড় মান্থা, শক্তি বাড়িয়ে অবস্থান করছে বঙ্গোপসাগরে। এই মুহূর্তে সেটি তামিলনাড়ু থেকে প্রায় ৪৪০ কিমি পূর্ব - দক্ষিণ পূর্বে, অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া থেকে ৪৯০ কিমি দক্ষিণ - দক্ষিণ পূর্বে, বিশাখাপত্তনম থেকে ৫৩০ কিমি দক্ষিণ - দক্ষিণ পূর্বে, ওড়িশার গোপালপুর থেকে ৭১০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে সেটি।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে টানা অগ্রসর হয়ে ২৮ তারিখ সন্ধের দিকে কাকিনাড়ার আশেপাশে মছলিপত্তনম এবং কলিঙ্গপত্তনমের মধ্য দিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগে, মঙ্গলবার সকালেই মধ্যে মান্থা অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। আগামী ১২ ঘণ্টায় এটি এগিয়ে যাবে ক্রমে। আগামিকাল সকালেই আরও শক্তি বাড়াবে এই ঘূর্ণিঝড়। ল্যান্ডফলের সময় এর গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
মৌসম ভবন আরও জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল মছলিপত্তনাম - কলিঙ্গপত্তনাম (কাকিনাড়ার কাছে) দিয়ে বয়ে যাবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থা। সেই সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিমি হতে পারে। সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ১১০ কিমিও হতে পারে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া এবং মছলিপত্তনম উপকূলের মধ্যে কোনও একটি জায়গায় ল্যান্ডফল হবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থার। এর জেরে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে সমুদ্র থেকে মৎস্যজীবীদের ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর থেকে বৃহস্পতিবার ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় ৫৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তাল থাকবে সমুদ্র। এই তিনদিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যে সমুদ্র থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মান্থার প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কর্নাটক, রাজস্থান, গুজরাট, কেরল, মাহে, ওড়িশা, রয়েলসীমা, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি ও করাইকালে। এছাড়া ছত্তিশগড়, কর্নাটক, কঙ্কন-গোয়া ও মধ্যপ্রদেশ সংলগ্ন এলাকাতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি সপ্তাহে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও।
অন্যদিকে ভারতবর্ষের পশ্চিম অংশে অর্থাৎ আরব সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দক্ষিন গুজরাটের উপকূলে আগামী ৩০ নভেম্বর দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেই কারণেই আরব সাগর উপকূল বরাবর গুজরাট মহারাষ্ট্র এবং উত্তর কর্ণাটকে প্রবল দুর্যোগে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ আগামী পরশু অথবা তার পরের দিন পর্যন্ত এই বৃষ্টির দাপট চলতে পারে।