চিত্তরঞ্জন দাস: বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারি পড়ুয়া ধর্ষণ কাণ্ডে মূল ধর্ষক ফিরদৌস! টিআই প্যারেডের রিপোর্ট খুলতেই ফাঁস ভয়ংকর তথ্য জানালেন নির্যাতিতার আইনজীবী।
দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (Durgapur Medical College Incident) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর ধর্ষণের ঘটনায় বড়সড় মোড়। টিআই প্যারেডের (Test Identification) রিপোর্ট খুলতেই বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। নির্যাতিতার (Durgapur Victim) আইনজীবী পার্থ ঘোষ দাবি করলেন, 'ফিরদৌস শেখই এই ধর্ষণ ঘটনার মূল অভিযুক্ত। সেই করেছে ধর্ষণ। বাকি পাঁচজনও কোনও না কোনভাবে যুক্ত ভয়াবহ গণধর্ষণে (Gangrape)।' সোমবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে (Durgapur Magistrate Court) ভার্চুয়ালি পেশ করা হয় ছয় অভিযুক্তকেই। পাঁচ দিনের জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষে ফের আদালতের নির্দেশে তাদের হাজির করা হয় আজ সোমবার। আদালতে এদিন নির্যাতিতার আইনজীবী টিআই প্যারেডের রিপোর্ট খোলার আবেদন জানান। বিচারক আবেদন মঞ্জুর করেন। পার্থ ঘোষ আরও বলেন, 'ফিরদৌস শেখ ধর্ষণ করলেও এর সঙ্গে বাকিরা যুক্ত সেজন্য এটি নিঃসন্দেহে গণধর্ষণ।' আ্যডিশেনাল সিভিল জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট শুভ্র কান্তি ধর এদিন নির্দেশ দেন, 'মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হচ্ছে আগামী ৩১ অক্টোবর।'
প্রসঙ্গত দুর্গাপুর বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ছয় অভিযুক্তকে নিয়ে তদন্ত আরও এক ধাপ এগোতে, সহপাঠী-অভিযুক্ত ছাড়া বাকি পাঁচজনের মুখোমুখি টিআই প্যারেড করানো হয়েছিল দুর্গাপুর মহকুমা উপ-সংশোধনাগারে।
এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হল বিচারকের উপস্থিতিতে, যাতে নিগৃহিতার বয়ান ও শনাক্তকরণ আইনি দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ বৈধতা পায়। শুক্রবার দুপুর ঠিক বারোটার সময় দিকে নির্যাতিতা চিকিৎসক ছাত্রীকে দুর্গাপুর মহকুমা উপ-সংশোধনাগারে নিয়ে আসা হয় টিআই প্যারেডের জন্য। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা। নিরাপত্তা ছিল কড়া। ছিলেন অতিরিক্ত জেলা বিচারক রাজীব সরকার এবং এই মামলার তদন্তকারী অফিসার (আইও)। ১২টা থেকে ১:৩০ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলে। বিচারকের তত্ত্বাবধানেই টিআই প্যারেডের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হল। অভিযুক্তদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে ধর্ষিতা চিকিৎসক ছাত্রী কাদের চিহ্নিত করেছেন, সেটিই এখন তদন্তের মূল চাবিকাঠি।
প্রসঙ্গত, দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়াকে 'গণধর্ষণে'র ঘটনায় বুধবার ৪ অভিযুক্তকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছিল ৷ তবে, পুলিসের তরফে ধৃতদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করা হয়নি ৷ পুলিস সূত্রে খবর, আদালত এই চারজনকে জেল হেফাজতে পাঠালে, সেখানেই টিআই প্যারেডের ব্যবস্থা করা হতে পারে বলে জানিয়েছিল ৷ এর জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে ৷
উল্লেখ্য, দুর্গাপুর ধর্ষণ-কাণ্ডে মঙ্গলবার দুই অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হয়েছিল ৷ সেখানে বিচারক তাঁদের জেল হেফাজতে পাঠান ৷ এরপর এ দিন নির্যাতিতার সহপাঠী তথা প্রেমিক-সহ ৪ অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হয় ৷ উল্লেখ্য, দুর্গাপুর ধর্ষণ-কাণ্ডে প্রথমে শেখ রিয়াজউদ্দিন এবং শফিক শেখকে গ্রেফতার করে পুলিস ৷ তার পরেরদিন শেখ ফিরদৌস, শেখ নাসিরউদ্দিন এবং অপু বাউড়ি নামে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয় ৷
ওই দিন রাতেই নির্যাতিতার সহপাঠীকে গ্রেফতার করা হয় ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৷ উল্লেখ্য, ধৃত শেখ রিয়াজউদ্দিন, শফিক শেখ, শেখ ফিরদৌস, শেখ নাসিরউদ্দিন এবং অপু বাউড়ি দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পাশে বিজড়া গ্রামের বাসিন্দা ৷