স্টাফ রিপোর্টার: বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই বাংলায় শুরু হচ্ছে এসআইআর অর্থাৎ বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার রাতেই ‘ফ্রিজ’ করা হচ্ছে ভোটার তালিকা। মঙ্গলবার থেকে পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে এই প্রক্রিয়া। যা নিয়ে মতুয়া-রাজবংশী গড়ে চিন্তার কালোর মেঘ। এমনকী আদিবাসী গড়েও বাড়ছে দুশ্চিন্তা। কাঠগড়ায় বিজেপি।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বারবার বলে চলেছেন এসআইআর-এ বাদ যাওয়া ভোটারদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে পুশব্যাক করা হবে। এইধরণের মন্তব্যকে খুবই সিরিয়াসলি নিয়েছে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন। তাঁরা কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে নিজের দলকেই ছেড়ে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। এমনকী বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মতুয়া-নম-শূদ্ররাও। শান্তনু ঠাকুর, নিশীথ প্রামাণিক, অসীম সরকার সকলেই ভাবছেন তাহলে বিজেপির মহা বিপদ। আর বিজেপি নেতাদের মুখে ১ কোটি ২০ লক্ষ নাম বাদের আওয়াজ শুনে মতুয়ার পাশাপাশি রাজবংশী, আদিবাসীরাও চরম আতঙ্কে রয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী ও রোহিঙ্গাদের বাদ দিতেই এই সংশোধন করা হচ্ছে। কিন্তু উপযুক্ত নথির অভাবে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কায় হিন্দু উদ্বাস্তুরা।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও আবার মতুয়া, নমঃশূদ্রদের অনেকেই এখনও নাগরিকত্ব পায়নি। সেই কারণে ওই অংশের মানুষও আশঙ্কায় আছেন। এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কা থেকেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরকে দাবি করতে হয়েছে, এসআইআর-এ নাম বাদ গেলেও মতুয়া উদ্বাস্তুদের সিএএ-এর মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এ বিষয়ে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেছেন, ‘‘এসআইআর হলে সবচেয়ে বেশি মতুয়া উদ্বাস্তুদের নাম কাটা যাবে, তা শান্তনু ঠাকুররা জানেন।’’
প্রসঙ্গত, উত্তর ২৪ পরগনা ও নদীয়া জেলায় মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস বেশি। এছাড়াও রাজ্যের আরও অন্যান্য জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে রয়েছেন মতুয়ারা। বনগাঁ, রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে বড় অংশের মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের ভোটাধিকার রয়েছে। মতুয়াদের আশঙ্কা, এসআইআর হলে আবার তাঁদের হেনস্তার মুখে পড়তে হতে পারে, কাগজপত্র সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিতে পারে। এছাড়া, উত্তরবঙ্গে কোচবিহার-সহ বিস্তীর্ন এলাকায় রাজবংশী সমাজ রয়েছে। যঁারাও আশঙ্কা প্রকাশ করছে এসআইআরের জেরে তঁাদের নাম বাদ যাওয়া নিয়ে। জানা গিয়েছে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় পরিবারের কারও নাম নেই এমন ব্যক্তিদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে পারে কমিশন। ভোটার তালিকায় থাকা সব মৃত এবং অবৈধ ভোটারের নাম বাদ পড়বে। এ ক্ষেত্রে বিশেষত বাংলাদেশ এবং মায়ানমার থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের ইঙ্গিত করা হয়েছে।