SIR নিয়ে একযোগে বিজেপি-কমিশনকে নিশানা, প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি বাম-কংগ্রেসের
প্রতিদিন | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দ্বিতীয় পর্বে বাংলা-সহ ১২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনী বা এসআইআর শুরু হচ্ছে। সাংবাদিক বৈঠকে ঘোষণা করেছেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। এই পরিস্থিতিতে একযোগে কমিশন এবং বিজেপিকে নিশানা করল বাম-কংগ্রেস।
বিহারে এসআইআরে যখন ৬৫ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছিল, তখনই প্রদেশ কংগ্রেস দাবি করেছিল, এ রাজ্যে এসআইআর ঘোষণার আগে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হোক। দফায় দফায় কমিশনের দপ্তরে গিয়ে নিজেদের দাবিদাওয়া জানিয়ে এসেছিল তারা। কিন্তু কমিশন তাতে কোনও ভ্রুক্ষেপ করেনি। এই অবস্থায় প্রদেশ কংগ্রেস ঘোষণা করল, বাংলার ভোটারদের ভোটাধিকার এবং নিরাপত্তার খাতিরে সর্বতোভাবে পথে নামবে তারা। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। অন্যদিকে, এসআইআর ইস্যুতে নভেম্বরে ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’-র ডাক দিয়েছে সিপিএম। প্রতিবাদে এসইউসি, সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক-সহ সমস্ত বাম দল নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে ডেপুটেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, “এসআইআর বিজ্ঞপ্তি জারির আগে আমরা দাবি করেছিলাম কমিশন সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুক। তা না করে তারা ত্রুটিপূর্ণ এই প্রক্রিয়া এরাজ্যের ৭.৬৬ কোটি ভোটার-সহ দেশের ১২টি রাজ্যের ৫১ কোটি ভোটারের উপর চাপিয়ে দিল। এটা দুর্ভাগ্যজনক।” তাঁর কথায়, “এই বিষয়টি আমরা ভালোভাবে নিলাম না। মানুষ বিপদে পড়লে আমরা আদালতে যেতে বাধ্য হব।” অন্যদিকে, প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, রাজ্যে ৮০ হাজারেরও বেশি বুথের জন্য কংগ্রেস ইতিমধ্যেই তাদের বুথ এজেন্ট জোগাড় করে ফেলেছে। তিনি বলেন, “১০০ শতাংশ বুথে আমাদের এজেন্ট থাকবে। প্রথমে জেলাভিত্তিক ও বিধানসভাভিত্তিক পর্যবেক্ষকের মাধ্যমে এবং পরে কলকাতায় এনে সকলের প্রশিক্ষণ হবে।” তিনি আরও বলেন, “বিহারের ভুল থেকে কমিশন শিক্ষা নেয়নি। মানুষের মত না নিয়েই বাংলায় ত্রুটিপূর্ণ এসআইআর ঘোষণা করল কমিশন।”
এসআইআর ইস্যুতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও সরাসরি কমিশনকে তোপ দেগেছেন। তাঁর অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “মানুষকে সবরকম সহায়তা করা হবে। সিপিএম কর্মীরা মানুষের পাশে আছে। এসআইআরের নাম করে মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে। কোনওভাবে মানুষের ভোটাধিকারকে সঙ্কুচিত করা যাবে না।” এসআইআর-এর বিরোধীতা করেছে এসইউসিআইও। এসইউসিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য বলেন, “বিজেপির মুখপাত্র হয়ে কমিশন এই এসআইআর ঘোষণা করল। যে কাজ কেন্দ্র সরকারের করার কথা, সেই দায়িত্ব নাগরিকদের উপর দিয়ে দিচ্ছে কমিশন।”