• এসআইআর ইস্যুতে বিএলও-দের সঙ্গে নামছেন তৃণমূলের বুথ এজেন্টরা, কড়া নজরে দলীয় সমীক্ষাও
    প্রতিদিন | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: এসআইআর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সবরকম সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিয়ে ময়দানে নেমে পড়ল তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার থেকেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে পথে নামছে তারা। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের নির্দেশে রাজ‌্য সভাপতি সুব্রত বক্সি রাজ‌্যজুড়ে সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করে দিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস ইতিপূর্বেই বড় আন্দোলনের কথা জানিয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে জেলা বা বিধানসভাভিত্তিক সভা হতে পারে। আবার কেন্দ্রীয়ভাবে ব্রিগেডেও সেই সভা হতে পারে।

    আগামী ৪ নভেম্বর থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার সমীক্ষার কাজ শুরু করছে কমিশন। সেই কথা মাথায় রেখে তার আগেই প্রায় ৮১ হাজার বুথের সবকটিতে বিএলএ ২ নিয়োগের কথা জানিয়ে দিয়েছে রাজ্যের শাসকদলও। বিএলও-দের সঙ্গে থাকবেন দলের বুথ এজেন্ট ও দলের অন‌্য কর্মীরাও। গোটা প্রক্রিয়া যাতে নির্দিষ্টভাবে মনিটরিং করা যায়, পাশাপাশি ভোটারদের পাশে যে কোনও সমস‌্যায় থাকা যায়, তার জন‌্যই এই প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে তৃণমূল। দলের বিএলএ ২-দের এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে নেওয়া হবে। রাজনৈতিক দলের বিএলএ ২ যারা হবেন, ৫০টি করে ভোটারের নাম নির্দিষ্ট ফর্মে সই করে তাঁরাই জমা দিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশনের রুলবুক অনুযায়ী সেই অধিকার তাঁদের আছে। বুথ লেভেল অফিসাররাও সেই তালিকা জমা নিতে বাধ‌্য।

    তৃণমূল জানিয়ে দিয়েছে, একমাত্র তৃণমূলেরই সব বুথে সংগঠন আছে। প্রতি বুথের জন‌্য বিএলএ ২-ও তাঁদের প্রস্তুত। সেসব সামনে রেখেই একেবারে বিধানসভাভিত্তিক যাবতীয় পদক্ষেপ তাদের সারা। আরও একটি সিদ্ধান্ত দলের বুথ এজেন্টদের সুবিধার্থে তৃণমূল নিয়েছে। এতদিন যারা ভোটারতালিকা স্ক্রুটিনির কাজ করেছেন, যারা সমস্ত ভোটারকে চেনেন তাঁরা বিএলও এবং দলের এজেন্টদের সঙ্গে থাকবেন। যেসব এজেন্ট এতদিন এই কাজ করে এসেছেন, যারা অভিজ্ঞ তাঁরা এজেন্ট হিসাবে থাকছেনই। কিছু ক্ষেত্রে যোগ‌্য হিসাবে কিছু রদবদল করা হয়েছে। তালিকায় যাতে ভোটাররা নিজেদের নাম যাচাই করে নিতে পারেন সেই সংক্রান্ত সহযোগিতা ভোটাররা দলের তরফে পাবেন। দলের বক্তব‌্য, ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে এই সমীক্ষা বিশেষভাবে নির্ণয়কারী হয়ে উঠবে।

    দলের এই সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিয়ে তৃণমূলের সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব‌্য, “যত রাজনৈতিক দল আছে তাদের মধ্যে বুথভিত্তিক সংগঠন শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের আছে। ভোটার তালিকা সমীক্ষার কাজ তৃণমূলের কর্মীদের প্রথম দিন থেকে শিখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়। সেটা তৃণমূলের নিজস্ব রাজনৈতিক কালচারের একটা অঙ্গ। ফলে এই তালিকা সমীক্ষা, অ্যাডিশন-ডিলিশন-অল্টারেশনের কাজে তৃণমূলের বুথ স্তরের কর্মীরা অভিজ্ঞ এবং দক্ষ। এই কাজে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে নামছি। একটা বৈধ ভোটারও যাতে বাদ না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।”

    একই সঙ্গে এ নিয়ে কোনও বিভ্রান্ত বা কোনও প্ররোচনায় কেউ যাতে পা না দেন, সেই আবেদন করেছেন দলের রাজ‌্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, “এই সমীক্ষার একটা রুটিন আছে। সবটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা হচ্ছে। আমাদের দাবি নির্ভুল ভোটার তালিকা। অন্য রাজ্যের ভোটার এই রাজ্যে কপি পেস্ট করা হয়েছিল। যা পরে ধরা পড়ে।” কুণালের স্পষ্ট বক্তব‌্য, “একজন জেনুইন ভোটারের নামও বাদ গেলে তার প্রতিবাদ হবে। আমরা স্বচ্ছ ভোটার তালিকা চাই। হয়রানি যেন কারও না হয়। তেমন হলে দিল্লিতে কমিশন অফিস ঘেরাও হবে এক লক্ষ মানুষ নিয়ে।” দলের তরফে তাঁর আবেদন, “বাংলার মানুষকে বলব, আপনারা বিজেপির উপর বিরক্ত। কিন্তু কোথাও সমস্যা হলে আইন বর্হিভূতভাবে বিজেপির প্ররোচনায় পা দেবেন না। সাংবিধানিকভাবে যথাযথভাবে আন্দোলন হবে। দলের প্রতি আস্থা রাখুন। কারও প্ররোচনায় পা দেবেন না।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)