পরিবার নয়, রেশনে মাথাপিছু ৭.৫ কেজি চাল-গম দেবে কেন্দ্র
বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
কৌশিক ঘোষ, কলকাতা:
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের (এনএফএসএ) আওতায় অন্ত্যোদয় রেশন গ্রাহকদের এখন পরিবার পিছু খাদ্যশস্য (চাল ও গম) বরাদ্দ করা হয়। এই নিয়মে পরিবর্তন এনে এবার মাথাপিছু খাদ্যশস্য বরাদ্দ করার পথে হাঁটছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিষয়টি কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রকের ‘অ্যাকশন প্ল্যানে’ অন্তর্ভুক্ত করে আগামী বছর মার্চ মাসের মধ্যে চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রকের সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, অন্ত্যোদয় পরিবারগুলির মধ্যে খাদ্যশস্য বণ্টনে বৈষম্য হচ্ছে। তাই মাথাপিছু খাদ্যশস্য দেওয়া দরকার। কীরকম বৈষম্য? কোনও কোনও অন্ত্যোদয় পরিবারে সদস্য সংখ্যা সাতের বেশি। বহু পরিবারে আবার সদস্য সংখ্যা ২-৩ জন। বর্তমান নিয়মে পরিবারের সদস্য সংখ্যা যা-ই হোক না কেন, মাসে ৩৫ কেজি করে খাদ্যশস্য মেলে। এই সমস্যা নিরসন করতেই অন্ত্যোদয় পরিবারগুলির প্রত্যেক সদস্য পিছু মাসে সাড়ে ৭ কেজি করে খাদ্যশস্য দিতে চাইছে কেন্দ্র। নয়া নিয়ম বলবৎ হলে কোনও পরিবারে চারজন পর্যন্ত সদস্য থাকলে এখনকার তুলনায় কম খাদ্য দিতে হবে। খাদ্যমন্ত্রক তাদের নিজস্ব বিশ্লেষণে দেখেছে, দেশের ১ কোটি ৭১ লক্ষ অন্ত্যোদয় পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৫ জনের কম। ২৫ লক্ষ ৮২ হাজার পরিবারের ক্ষেত্রে সদস্য পাঁচজনের বেশি। এর থেকেই স্পষ্ট, নয়া নিয়ম চালু হলে খাদ্যশস্যে অনেকটা সাশ্রয় করতে পারবে কেন্দ্র।
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় থাকা অন্য শ্রেণির রেশন গ্রাহকরা মাসে মাথা পিছু পাঁচ কেজি করে খাদ্যশস্য পান। ২০১৩ সালে দেশে খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু হয়। সেই আইনেই অন্ত্যোদয় গ্রাহকদের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ নির্দিষ্ট (৩৫ কেজি) করে দেওয়া হয়েছে। তাই এখন পরিমাণ পরিবর্তন করতে হলে সেই আইনে সংশোধনী আনতে হবে। খাদ্যমন্ত্রক সেই পথেই হাঁটছে বলে খবর।
যেসব পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ, তাদের অন্ত্যোদয় শ্রেণির রেশন কার্ড দেওয়া হয়। ২০১৩ সালেই কেন্দ্র নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল, এই খাতে কোন রাজ্যের কত পরিবার সুবিধা পাবে। পশ্চিমবঙ্গে অন্ত্যোদয় রেশন গ্রাহক পরিবারের কোটা নির্দিষ্ট হয় ১৬ লক্ষ ১৬ হাজার ৫০৮-এ। খাদ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সংখ্যক পরিবারের মোট ৫২ লক্ষ ৬২ হাজার ৬৬৯ জন অন্ত্যোদয় প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। অর্থাৎ পরিবার পিছু গড়ে ৪ জনের কম সদস্য। কিন্তু এই পরিবারগুলি মাসে ৩৫ কেজি করে খাদ্যশস্য পেয়ে আসছে। প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারও গত কয়েক মাস ধরে এক সদস্য বিশিষ্ট অন্ত্যোদয় পরিবারগুলি চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছিল।