ছটপুজো: বিজেপির মাছ-মাংসের দোকান বন্ধের ফতোয়া! আন্দোলনে তৃণমূল, সিপিএম ও বাংলা পক্ষ
বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: বিজেপির মাছ-মাংস দোকান বন্ধের ফতোয়ার বিরুদ্ধে গর্জে উঠল অণ্ডাল। রবিবার অভিযোগ উঠেছিল, বিজেপি নেতা-কর্মীরা জোর করে মাংসের দোকান বন্ধ করার চেষ্টা করেন। দোকান বন্ধ করতে না চাইলে তাঁকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। ফতোয়া জারি করেছিল, ছটপুজো উপলক্ষ্যে রবি ও সোমবার অণ্ডাল বাজারে মাছ-মাংসের দোকান বন্ধ রাখতে হবে। রবিবার থেকে এনিয়ে প্রবল সমালোচনা হয়। সোমবার তা আন্দোলনের চেহারা নেয়।
এদিন সকাল থেকে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা উত্তর অণ্ডাল দক্ষিণ বাজারে সক্রিয় ছিলেন। বিজেপির ফতোয়ার বিরুদ্ধে তাঁরা প্রবল বিক্ষোভ দেখান। পাশাপাশি মাছ-মাংসের দোকানগুলি খোলানোর উদ্যোগ নেন। ব্লকের যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পাপ্পু কুণ্ডু বলেন, আমাদের নেত্রী বলেছেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা ছট উৎসবও পালন করি। ইচ্ছে করে বিজেপি অণ্ডালে অশান্তি পাকানোর জন্য এই ধরনের ফতোয়া জারি করছে। সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তারই প্রতিবাদ করেছি আমরা। বিজেপির এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে এদিন রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে দেখা যায় সিপিএমকেও। তাঁরা জানায়, মানুষ কী খাবে তা কোনও রাজনৈতিক দল ঠিক করে দিতে পারে না। তৃণমূল ও সিপিএম দু’পক্ষ একই দাবিতে রাস্তায় নামে। কিন্তু, এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে আবার বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। অণ্ডাল থানার পুলিশ দু’পক্ষকে সামাল দেয়। এদিন অরাজনৈতিক দল বাংলা পক্ষও আন্দোলনে নেমেছিল। তারা ব্যবসায়ীদের মাংস ও মাছের দোকান খোলার আর্জি জানায়। সেইসঙ্গে ওই সংগঠনের সদস্যরা অণ্ডাল বাজারে মাছও বিক্রি করেন। পাশাপাশি এদিন মাছ বিলিও করে।
বাংলা পক্ষের জেলা সম্পাদক অক্ষয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপির হুলিয়ার প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় নেমে মাছ বিক্রি ও বিতরণ করেছি। সাধারণ মানুষ বাজারে বেরিয়ে মাছ মাংস কিনে বিজেপির ফতোয়ার বিরোধিতা করেছেন। অবাঙালিরাও স্পষ্ট করে দিয়েছিল, এই ধরনের ফতোয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। বহু বছর ধরে অবাঙালিরা বাঙালিদের সহযোগিতা নিয়েই সাড়ম্বরে ছট উৎসব পালন করে আসছেন। কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি।
অণ্ডালের ব্যবসায়িক মহলের দাবি, ছট উৎসব শুরু হওয়ার সময় থেকে মাছ, মাংস বিক্রেতারা নিজে থেকেই দোকান বন্ধ রাখেন। যাতে ছটব্রতীদের কোনও সমস্যা না হয়। বিজেপির গাজোয়ারি ফতোয়া পরিবেশ নষ্ট করে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে এনিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিজেপি নেতৃত্ব। রানিগঞ্জ বিধানসভা এলাকার বিজেপির মণ্ডল সভাপতি রাখালচন্দ্র দাস বলেন, আমরা কোনও ফতোয়া জারি করিনি। শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করা হয়েছিল। ছট উপলক্ষ্যে বাঙালিরা স্বেচ্ছায় বাড়ির সামনের রাস্তা ধুয়ে পরিষ্কার করে দেন। সেখানে ছট পালন করা মানুষজন সুষ্ঠুভাবে হেঁটে ঘাটে যায়। রাস্তার উপর মাছ ও মাংসের জল পড়ে থাকলে তা বিড়ম্বনা সৃষ্টি করে। সে জন্য এই কথা বলা হয়েছিল।