• মিশন ছাব্বিশ, পুরনো নেতা-কর্মীদের রাগ ভাঙাতে আসরে অবতীর্ণ আশিস
    বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • বলরাম দত্তবণিক , রামপুরহাট :

    নতুনদের সঙ্গে রেখেই পুরনো কর্মীদের সক্রিয় করতে রামপুরহাটে অভিযানে নামছে তৃণমূল। জগদ্ধাত্রী পুজোর পরই শুরু হচ্ছে সেই কর্মসূচি। বিধায়ক তথা দলের জেলা চেয়ারপার্সন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ‘নতুন ও পুরনো কর্মীদের সঙ্গে মিলিত হতে চাই’ বলে চিঠি ছাপিয়ে বিলিও শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘যাঁরা নানা কারণে মান, অভিমান করে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন, সেইসব পুরনো কর্মীদের অভাব, অভিযোগ শুনে ফের সক্রিয় করার লক্ষ্যেই এই কর্মসূচি। আগামী ৩১ অক্টোবর রামপুরহাট ১ ব্লকের খরুণ অঞ্চল দিয়ে সেই কর্মসূচি চলবে। শহরেও প্রতিটি ওয়ার্ডে একইভাবে পুরনো কর্মীদের সঙ্গে মিলিত হব।’

    ‘তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে মিলিত হতে চাই। সকলের উপস্থিতি একান্তভাবে কামনা করি। অভিনন্দন সহ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।’—এই চিঠি এখন দলের অনেক বসে যাওয়া ও নিষ্ক্রিয় কর্মীর হাতে হাতে ঘুরছে। যা নিয়ে দলের অন্দরে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। অনেকেই বলছেন, সামনে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে দলীয় সংগঠন চাঙ্গা করার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি সাংগঠনিক স্তরে রদবদলও করেছে রাজ্য নেতৃত্ব। বিশেষে করে গত বিধানসভা ও লোকসভায় রামপুরহাটে আশানুরূপ ফল না হওয়ায় দলকে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে নবীন ও প্রবীণ বিভেদ সরিয়ে রেখে সবাইকে নিয়ে চলার বার্তাও দিচ্ছেন জেলা কোর কমিটির সদস্যরা। 

    রামপুরহাট ১ ব্লকের ন’টি ও মহম্মদবাজারের ছ’টি ব্লক এবং শহরের ১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই রামপুরহাট বিধানসভা। ২০ শতাংশের কিছু বেশি সংখ্যালঘু ভোটার। গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে রামপুরহাট ১ ব্লকের কুসুম্বা ও খরুণ অঞ্চলে পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল। মহম্মদবাজার ব্লকের ভাড়কাঁটা ও সেকেড্ডা অঞ্চলে এগিয়ে ছিল তৃণমূল প্রার্থী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকি চারটি অঞ্চলে অল্প ভোটে পিছিয়ে পড়তে হয়। একইভাবে শহরে ব্যাপক ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। তবে, শেষমুহূর্তে জয়লাভ করেন আশিসবাবু। যদিও পরে গত লোকসভা নির্বাচনেও এই বিধানসভায় আশানুরূপ ফল হয়নি শাসকদলের। যার জেরে সম্প্রতি রামপুরহাট শহর সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া বেশ কিছু সাংগঠনিক রদবদল হয়েছে। 

    দলীয় সূত্রের খবর, অনেক কর্মী স্থানীয়স্তরের নেতা-কর্মীদের উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে বাড়িতে বসে পড়েছেন। কেউবা একটা সময় ভালো সংগঠকের পরিচয় দিলেও বর্তমানে নানা কারণে দলের হয়ে কাজ করছেন না। এবার তাঁদের মুখ থেকে অভাব অভিযোগ শুনে সমস্যার সমাধানের উদ্যোগী হয়েছেন বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।

    আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে সেই কর্মসূচিতে নামছেন আশিসবাবু। ওই দিন খরুণ অঞ্চলের পুরনো ও নতুন কর্মীদের নিয়ে বসবেন তিনি। আশিসবাবু বলেন, ‘অঞ্চল ও শহরের ওয়ার্ড ভিত্তিক নতুন, পুরনো ও নিষ্ক্রিয় কর্মীদের সঙ্গে মিলিত হব। তাঁদের সমস্যা, অভিযোগ শুনে সমাধানের পথ বের করে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানাব।’ দলের এক নেতা বলেন, ‘যাঁরাই রাগ, অভিমান করে বসে রয়েছেন, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই দল করেছেন বা করছেন। ফলে, নেত্রীর ভালোমন্দ দেখা উচিত। তুমি কতটা তাঁকে ভালোবাসা দেখাতে পারছ, বা দলের হয়ে কাজ করছো, সেটাই আসল। বিধানসভা ভোট মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী করা। তাই রাগ-অভিমান ভুলে তাঁর হাত শক্ত করতে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে।’   
  • Link to this news (বর্তমান)