• ঝাড়গ্রামে বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ বালি তোলা, গোরুর গাড়িতে করে পাচার
    বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্ৰামে কংসাবতী নদী থেকে বেআইনি বালি পাচার চলছেই। দ্বিতীয়বার ‘ইডি’-র হানার পর জেলার বালি খাদান থেকে বালি তোলা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। ডাম্পার ও লরিতে বালি পাচার বন্ধের পর গোরুর গাড়ি করে বালি পাচার হচ্ছে। বিনপুর ব্লকের বড় পলাশী এলাকায় সন্ধেবেলা ও ভোররাতে কংসাবতী নদী থেকে বালি তোলা হচ্ছে। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, জেলার বৈধ বালি খাদানগুলি ২৯ অক্টোবর থেকে চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গোরুর গাড়িতে করে বালি পাচারের অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। বেআইনি বালি পাচার মামলায় ইডি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বালি পাচার মামলার তদন্তে সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখে ইডি রাজ্যজুড়ে অভিযান চালিয়েছিল। গোপীবল্লভপুর -১ ব্লকের বালি খাদান সহ বালি কারবারিদের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল। আবার ১৬ অক্টোবর গোপীবল্লভপুর সুমিত্রাপুরের একটি বালি খাদান ও লালগড়ের সিজুয়ার একটা বালি খাদান অফিসে ইডি নতুন করে হানা দেয়। খাদান অফিসে ইডির অফিসাররা বালি বিক্রির চালান অর্ডার (সিউ) সহ অন্য নথিপত্র খতিয়ে দেখেন। জেলা প্রশাসনের তরফে এরপরেই বৈধ বালি খাদান থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বালি তোলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। খাদানে বালি তোলা বন্ধ হলেও জেলার নদী থেকে বেআইনিভাবে বালি তোলা বন্ধ হয়নি। বিনপুর-১ ব্লকের ধেরুয়া থেকে ভালুকা পথে গোরুর গাড়িতে করে বালি পাচার করা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বালি পাচারের পিছন বড় গোষ্ঠী না থাকলে দিনের পর দিন এমনভাবে বালি পাচার সম্ভব নয়। রাস্তায় পুলিশের নজরদারি ও নাকা চেকিং রয়েছে। তারপরেও বিকেলে চারটে থেকে রাত আটটা ও ভোর চারটে থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত অবাধে বালি পাচার চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভোরে গ্ৰামের রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই গোরুর গাড়ির যাতায়াত বেড়ে গিয়েছে। এক একটা সারিতে ১৫ থেকে ২০টা গোরুর গাড়ি যাচ্ছে। নদী থেকে বালি প্রথমে আঁধারিয়া, ভালুকা এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে জেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে পাঠানো হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসনের নজর এড়িয়ে বালি বোঝাই গোরুর গাড়ি কীভাবে যাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।  বৈতা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের এক বাসিন্দা বলেন, প্রত্যন্ত বড়পলাশী মৌজায় বালির কোনও খাদান নেই। কংসাবতীর নদীগর্ভ থেকে সন্ধে ও ভোরে লোকচক্ষুর আড়ালে যথেচ্ছভাবে বালি তোলা হচ্ছে। গ্ৰামবাসীরা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বালি পাচারের কথা জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর দায় এড়িয়ে গিয়েছে। নদীর গতিপথ দক্ষিণ থেকে উত্তরদিকে ক্রমাগত এগিয়ে আসছে। চোখের সামনে চাষের জমি নদীর গর্ভে চলে যাচ্ছে।  নদী বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। তাতে এক অঞ্চল রক্ষা পেলেও অন্য এলাকা নদীর গ্ৰাসের মুখে পড়ছে। সিজুয়া এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, নদীর পাড় কেটে বালি তোলা নিয়ে লাগাতার প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। গ্ৰাম লাগোয়া নদীর পাড় কাটা হলে দুর্ঘটনা ঘটবে বলে আশঙ্কা করেছিলাম। নদী পাড়ের গর্তে পড়ে গিয়ে আমার আট বছরের ছেলের মৃত্যু হয়েছে। কোথাও অভিযোগ করতে পারিনি। অভিযোগ করেও কোন সুরাহা মিলত না। -ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)