• ফুটপাত এবং হোটেলের খাবার তৈরিতে মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি? উঠছে প্রশ্ন
    বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: ফুটপাতের স্টল থেকে শুরু করে প্রায় সব হোটেলেই এখন বিরিয়ানি মিলছে। লাল শালু মোড়া দৈত্যাকার হাঁড়ি থেকে বেরোতে থাকে বিরিয়ানির সুগন্ধ। আবার সন্ধ্যে নামলেই পথের ধারের রোল, চাউমিনের টানে ভিড় জমান খাদ্যরসিকরা। কিন্তু এসব খাবার কতটা স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারও। জিভে জল আনা বিরিয়ানিতে কি ক্ষতিকারক কোনও রং মেশানো হচ্ছে! আবার রাস্তার এসব রোল, চাউমিন, মোমো কি যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তৈরি করছেন ব্যবসায়ীরা। এসব নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। অভিযোগ, রীতিমতো স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই পুরুলিয়া জেলাজুড়ে ছোট থেকে বড় দোকান ও হোটেলগুলিতে খাবার তৈরি ও তা পরিবেশনের কাজ চলছে। জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশও বিভিন্ন সময় এনিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে আমজনতার প্রশ্ন, শুধু উষ্মাপ্রকাশ করেই কি দায় এড়ানো সম্ভব? এবিষয়ে জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ তথা জেলা খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক মহুয়া মহান্তি বলেন, ফুটপাতের সাধারণ দোকান থেকে শুরু করে হোটেলগুলির উপর আমরা নজরদারি চালিয়ে থাকি। তবে আগামীতে নজরদারির উপর আরও বেশি জোর দেওয়া হবে। পুরুলিয়া জেলার সদর শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত জুড়ে মাঝেমধ্যেই ব্যাঙের ছাতার মতো ফাস্টফুডের দোকান গজিয়ে উঠছে। সেই তালিকায় থাকা অধিকাংশ দোকানের পরিবেশই  এককথায় অস্বাস্থ্যকর। অভিযোগ, ওই দোকানগুলিতে খাদ্যসুরক্ষা সংক্রান্ত ন্যূনতম কোনও বিধি মানা হয় না। খাবার পরিবেশনের ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতার বালাই নেই। হামেশাই আমজনতার পাতে বাসি খাবার দেওয়া হচ্ছে। সদর শহর থেকে শুরু করে জেলার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে, ছিটিয়ে থাকা বেশকিছু হোটেলও সেই তালিকাতেই নাম লিখিয়েছে। 

    এই পরিস্থিতিতে জেলাবাসী খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ। জেলাবাসীর বক্তব্য, মাঝেমধ্যে লোক দেখানো কিছু অভিযান চলে। কিন্তু তার কোনও ধারাবাহিকতা নেই। জেলা সদরের বাসিন্দা সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ফুটপাতের দোকান থেকে শুরু করে বেশকিছু হোটেলে আকছার বাসি খাবার পরিবেশন করা হয়। এমনকি, রান্নার উপকরণগুলি সঠিক গুনমানের কি না সেটাও স্পষ্ট নয়। আসলে নজরদারি চালানোর কেউ নেই। জেলার খাদ্য সুরক্ষা দপ্তর এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ফলত, ফুটপাত থেকে শুরু করে হোটেল সর্বত্র অরাজকতা চলছে। আমরা হয়তো খাবারের নামে শরীরে মারণ রোগকেই আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। 

    পুরুলিয়া-২ ব্লকের বাসিন্দা পশুপতি বাউড়ির কথায়, জেলার কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় বলে মনে হয় না। সবক্ষেত্রেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। এসব জায়গায় খাবার ঢেকে রাখার চল খুব একটা নজরে পড়ে না। প্রশাসনের কর্তাদের নজরদারি চালানো প্রয়োজন। 

    পুরুলিয়া জেলা হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহিত লাটা বলেন, ফুটপাতের দোকান নিয়ে বলার কিছু নেই। তবে জেলার নামি হোটেলগুলির খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন নেই। যদিও কিছু হোটেলের খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এক্ষেত্রে আমরা আগামীতে খাদ্যসুরক্ষা দপ্তরের সহযোগিতায় যৌথভাবে নজরদারি চালাব। 
  • Link to this news (বর্তমান)