নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া ও কলকাতা: সোনার গয়না ছিনতাই করে পালানোর সময় দিল্লি পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াই। পুলিশের গুলিতে জখম অবস্থায় গত আগস্ট মাসে ধরা পড়েছিল কুখ্যাত ইরানি গ্যাংয়ের মাস্টারমাইন্ড শেখ মোর্তাজা আলি। তদন্তের প্রয়োজনে সম্প্রতি দিল্লি পুলিশ হাওড়ার গোলাবাড়ি থানায় আসতেই কয়েক মাস আগে এখানে ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি বাইক চুরি ও কেপমারির ঘটনার পর্দা ফাঁস হয়। জানা গিয়েছে, আগস্ট মাসে হাওড়ায় একাধিক কীর্তি ঘটিয়ে দিল্লি পালিয়ে গিয়েছিল মোর্তাজা। রবিবার ধৃতকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসা হয় হাওড়ায়। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে গোলাবাড়ি থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইরানি গ্যাংয়ের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড এই শেখ মোর্তাজা আলি অভিনব কায়দায় কেপমারিতে সিদ্ধহস্ত। বাইক চুরির ক্ষেত্রেও রীতিমত পটু সে। গত আগস্ট মাসে নকল পুলিশ সেজে হাওড়া স্টেশন চত্বরে এক ব্যক্তির সোনার আংটি হাতিয়ে নেয় মোর্তাজা। এর আগেও পুলিশ সাজা মোর্তাজার ফাঁদে পা দিয়ে তার হাতে সোনার গয়না তুলে দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন অনেকেই। গত ১২ আগস্ট গোলাবাড়ি থানায় এই সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হয়। শুধু তাই নয়, আগস্ট মাসেই গোলাবাড়ি থানা এলাকা থেকে তিনটি বাইক চুরির ঘটনা ঘটে। মাস্টার চাবি ব্যবহার করে চুরি করা হয়েছিল বাইকগুলো। তদন্তে নেমে দুটি ঘটনার পেছনেই মোর্তাজার কথা জানতে পারে পুলিস। জানা যায়, কলকাতার বউবাজার থানা এলাকাতেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বাইক চুরির অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি বারাসত, মধ্যমগ্রাম, বাগুইহাটি থানা এলাকায় একই কায়দায় বহু কেপমারির নেপথ্যে রয়েছে ইরানিয়ান গ্যাংয়ের এই মাথা। হাওড়ায় চুরি, কেপমারির পর আগস্ট মাসেই দিল্লি চলে যায় মোর্তাজা।
ঘটনায় ক্লাইম্যাক্স আসে দিল্লির নিজামুদ্দিন থানা এলাকায়। ১৯ আগস্ট সেখানে পুরনো পদ্ধতিতে কেপমারির পর সোনার গয়নার ছিনতাই করে পালাচ্ছিল মোর্তাজা। তাকে ধরতে পিছু নেয় দিল্লি পুলিশ। এনকাউন্টার চলাকালীন পুলিশ ও মোর্তাজার মধ্যে গুলির লড়াই চলে। শেষে পুলিশের গুলিতে জখম হয়ে ধরা পড়ে সে। সম্প্রতি নিজামুদ্দিন থানার পুলিশ তদন্তের জন্য গোলাবাড়ি থানায় আসতেই একে একে জট খুলতে শুরু করে পুরনো রহস্যের। এরপরেই রবিবার ইরানি গ্যাংয়ের মাস্টারমাইন্ডকে নিয়ে আসা হয় এখানে। ধৃতকে সোমবার হাওড়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। মামলার সরকারি কৌঁসুলি তারাগতি ঘটক বলেন, ‘অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় বহু মামলা রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।’