অনলাইন ‘অর্ডার’ বাতিল করে ওটিপি দিলেই অ্যাকাউন্ট ফাঁকা
বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, বনগাঁ: কলিং বেলের শব্দে বাইরে বেরিয়ে দেখলেন, ডেলিভারি বয় দাঁড়িয়ে। একটি পার্সেল এগিয়ে দিয়ে টাকা মেটাতে বললেন আগন্তুক। আপনি তো অবাক! কারণ, কোনও কিছু তো অর্ডার করেননি। তবুও পার্সেলের গায়ে আপনার নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর রয়েছে। পার্সেলে লেখা ‘ক্যাশ অন ডেলিভারি’। স্বাভাবিকভাবেই আপনি এমন পার্সেল নিতে রাজি হবে না। তখন আপনাকে বলা হবে, অর্ডারটি বাতিল করার জন্য একটি লিংক পাঠানো হচ্ছে আপনার ফোনে। এরপর চাইবে ওটিপি। কোনওভাবে সেই ওটিপি দিয়ে ফেললেই নিমেষে গায়েব হয়ে যাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত টাকা।
এভাবেই অনলাইন কেনাকাটার নাম করে ‘ফেক অর্ডার স্ক্যাম’-এর মাধ্যমে সাইবার প্রতারণার নয়া ফাঁদ পেতেছে প্রতারকরা। তাই এই ধরনের কোনও লিংক না খোলা এবং ওটিপি কাউকে না দেওয়ার জন্য বনগাঁ পুলিশ জেলার পক্ষ থেকে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বিষয়টি প্রচার করছে পুলিশ। তারা জানাচ্ছে, চলতি উৎসবের মরশুমে বিভিন্ন ই-কমার্স কোম্পানি তাদের পণ্যের উপর ঢালাও লোভনীয় অফার দিচ্ছে। সেই সুযোগে ভুয়ো ‘ক্যাশ অন ডেলিভারি’ পার্সেল নিয়ে ‘শিকার’-এর দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে প্রতারকরা। পুলিশের দাবি, এরকম প্রতারণায় সব ক্ষেত্রে বাড়িতেই ‘ডেলিভারি বয়’রা নাও আসতে পারে। ফোন মারফতও হতে পারে এই প্রতারণা। এ বিষয়ে বনগাঁ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘কোনও কিছু অর্ডার না করলে ডেলিভারি বয় এসে পার্সেল দিলে নেবেন না। অর্ডার ক্যানসেল করতে বললেও কোনও লিংক খুলবেন না। কখনওই কোনও ওটিপি শেয়ার করবেন না। এটা প্রতারণার নয়া ফাঁদ।’ তিনি আরও জানান, কোনও সাইবার প্রতারণার খপ্পরে পড়লেই সাইবার থানায় জানান। কারণ, দেশজুড়ে সক্রিয় সাইবার প্রতারণা চক্র। কোনও লিংক শেয়ার করে ওটিপি নিয়েই সাধারণের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিচ্ছে। চেইন সিস্টেমে অ্যাকাউন্ট বদল হয়ে টাকা চলে যাচ্ছে মূল প্রতারকের কাছে। প্রসঙ্গত, প্রতারকদের কাছে সহজেই পৌঁছে যায় ক্রেতার ঠিকানা সহ অনলাইন কেনাকাটা সংক্রান্ত সব তথ্য। সেগুলি ব্যবহার করেই অনলাইন কেনাকাটার নাম করে প্রতারণার নয়া ফাঁদ পেতেছে তারা।