• বিএলও-র নাম ছিল তালিকায়?
    আনন্দবাজার | ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • বুথ লেভের অফিসার (বিএলও), তাঁদের বাবা-মা ও ঠাকুরদা-ঠাকুমার নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল কিনা তা জানতে চাইল নির্বাচন কমিশন। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিএলও-দের। কিন্তু তাঁদেরই কারও-কারও নিজের বা পরিবারের লোকেদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল না বলে অভিযোগ উঠছে।

    সোমবার বিএলও-দের কাছে বেশ কয়েকটি তথ্য চেয়ে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। তার অন্যতম, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম থাকা বা না থাকার বিষয়টি। বিএলওদের ওয়টস্যাপ গ্রুপগুলিতে এই বিষয়ে নির্দিষ্ট প্রশ্ন জানিয়েছেন জেলার নির্বাচনী নিবন্ধীকরণ আধিকারিক (ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার, সংক্ষেপে ‘ইআরও’)। কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের ২০৩ নম্বর বুথের বিএলও দীপক রায় বলেন, “২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বিএলও এবং তাদের বাবা-মা, ঠাকুরদা-ঠাকুমার নাম ছিল কিনা তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা তা জানিয়েও দিচ্ছি।” নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও রাজস্ব) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতোই সব করা হচ্ছে।”

    এর আগে নদিয়ারই কৃষ্ণনগর দক্ষিণ ও কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় একাধিক বিএলও-র কথা জানা গিয়েছে, যাঁদের নিজেদের বা পরিবারের সদস্যদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল না। এই নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। এরই মধ্যে সরাসরি নির্বাচন কমিশন থেকে এই তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। অস্থায়ী কর্মীদের বিএলও হিসাবে নিয়োগ করা যাবে না বলে আগেই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তার ফলে এমনতেই প্রচুর বুথে বিএলও নিয়োগ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। এর মধ্যে যদি ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজের বা পরিবারের নাম না থাকার কারণে বিএলও ছাঁটতে হয়, ‌‌‌পরিস্থিতি কঠিনতরে হবে।

    এই নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক আব্দুর রহিম শেখ বলেন, “যারা নিজেরা বৈধ ভোটার কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে তাদের দিয়ে অন্যের বৈধতা বিচার ঠিক নয়।” সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাসের বক্তব্য বলেন, “আমরা বরাবর বিএলও নিয়োগে সতর্কতার কথা বলে এসেছি, যাতে তৃণমূল বা বিজেপি তালিকায় জালয়াতি করতে না পারে।” আবার বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সৈকত সরকারের দাবি, “তৃণমূল দলীয় কর্মীদের বিএলও বানাতে চাইছে। আমরা চাই, কড়া অবস্থান নিক কমিশন।” তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি যে কোনও যোগ্য ভোটারের নাম বাদ দেওয়া যাবে না। কাকে বিএলও করবে, তা নির্বাচন কমিশন ঠিক করুক।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)