এই রাজ্যে ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ বা এসআইআর নিয়ে আগেই বিরোধিতার সুর চড়িয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি নেতারা। এসআইআর নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল নেতাদের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। শাসক ও বিরোধী শিবিরের বাগবিতণ্ডাও চলে। দলের কিছু নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে অস্বস্তিতে পড়তে হয় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে । এমন আবহে দলের জেলা, ব্লক ও স্থানীয় নেতৃত্বকে দলীয় সভা বা সমাজ মাধ্যমে এসআইআর নিয়ে বেফাঁস বা বিতর্কিত মন্তব্য করতে নিষেধ করেছেন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব। এ বিষয়ে দলের জেলা পদাধিকারী ও ব্লক সভাপতিদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে।
তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত রায় বলেন,"এসআইআর নিয়ে আমাদের দলের নেতারা বক্তব্য রাখছেন। তা নিয়ে যাতে কোনও বিতর্কিত মন্তব্য না হয়, সে জন্য দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে বার্তা দেওয়া হয়েছে।’’ তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযুষ পণ্ডাও জানান, এসআইআর নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করা যাবে না। দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্যে এসআইআর নিয়ে দলের অবস্থান কী হবে তা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে না জানানো পর্যন্ত স্থানীয় নেতৃত্বকে এবিষয়ে নীরব থাকতে বলা হয়েছে।
রাজ্যে এসআইআর কার্যকর হওয়ার ঘোষণার দিন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব দলের জেলা কমিটির পদাধিকারী, মণ্ডল সভাপতি ও পর্যবেক্ষকদের নিয়ে সোমবার জরুরি 'ভার্চুয়াল' বৈঠক করেন। দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ায় ভোটারদের সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। দলের বুথ লেভেল এজেন্ট বা বিএলএ- ২ নিযুক্ত করা, তাঁদের প্রশিক্ষণের অগ্রগতি ও দায়িত্ব নিয়েও বৈঠকে পর্যালোচনা হয়।
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক বামদেব গুছাইত বলেন,"এসআইআর প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকার সংশোধনের কাজে সহযোগিতার জন্য দলের তরফে বুথ পর্যায়ের এজেন্ট নিযুক্ত করার পরে সোমবার থেকেই প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে । অঞ্চল ভিত্তিক এই প্রশিক্ষণ শিবির শেষ হবে কাল, বুধবার। দলের স্থানীয়, মণ্ডল ও জেলা নেতৃত্বের ভূমিকা কী হবে, তাও বৈঠকে জানানো হয়েছে।" অন্য দিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বামফ্রন্টের তরফে স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্ভুল ভাবে ভোটার তালিকা তৈরির দাবিতে এবং এসআইআরের নামে অযথা ভয় বা আতঙ্ক ছড়ানোর বিরুদ্ধে বুধবার তমলুকে জেলাশাসকের অফিসের সামনে অবস্থান, সভা ও স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জেলা বামফ্রন্টের তরফে দাবি করা হয়েছে, ভোটার তালিকা থেকে মৃত ও ভুয়ো ভোটারের নাম বাদ দিতে হবে। কোনও প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ দেওয়া চলবে না। নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক সংস্থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা চলবে না। বামফ্রন্টের প্রধান শরিক দল সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, "এসআইআর সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে জেলা শাসকের অফিসে বুধবার অবস্থান, সভা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’