ছটপুজোর দিন মাছ-মাংসের দোকান বন্ধ রাখতে বিজেপির ‘নির্দেশের’ বিরুদ্ধে সোমবার অন্ডালে পথে নামল নানা পক্ষ। অন্ডাল উত্তর বাজারে প্রতিবাদসভা করে সিপিএম এবং ‘বাংলা পক্ষ’ সংগঠন।
রবিবার সকালে বিজেপির রানিগঞ্জ বিধানসভার ২ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি রাখালচন্দ্র দাসের নেতৃত্বে ছটের সময়ে দু’দিন অন্ডাল দক্ষিণ ও উত্তর বাজারে রাস্তার ধারে মাছ ও মাংসের দোকান বন্ধ রাখতে বলা হয় বলে অভিযোগ। সে খবর পেয়ে, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দোকানদারদের জানিয়ে আসে, দোকান খোলা বা বন্ধ করা তাঁদের নিজেদের বিষয়। কারও হুমকিতে যেন দোকান বন্ধ করা না হয়।
এ দিন সকালে অন্ডাল উত্তর বাজারে মাছ ও মাংসের একটি করে দোকান খোলা ছিল। সকালে সিপিএমের দামোদর-অজয় (দক্ষিণ) এরিয়া কমিটির নেতৃত্বে উত্তর বাজারে একটি মিছিল ও প্রতিবাদসভা হয়। মাংসের দোকানের মালিক অজয় মণ্ডলের দাবি, এর আগে কখনও এ ভাবে দোকান বন্ধ রাখতে বলা হয়নি। রবিবার তাঁকে কয়েক জন এসে দোকান বন্ধের নির্দেশ দিলেও, তিনি তা মানেননি।
বিজেপি নেতা রাখালচন্দ্রের যদিও দাবি, তাঁরা কোনও দলের পতাকা নিয়ে বাজারে গিয়ে দোকান বন্ধ করার হুমকি দেননি। কয়েক জনকে নিয়ে রাস্তার পাশের মাংস ও মাছের দোকান রবি ও সোমবার দোকান বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সোমবার সিপিএম এবং তৃণমূল বিষয়টিকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহারের চেষ্টা করেছে। তাঁর দাবি, তাঁদের আবেদনে এ দিন রাস্তার পাশে আটটি মাংসের দোকান বন্ধ ছিল। এই এলাকায় ছটব্রতীরা ফল কিনতে আসেন বলেই তাঁরা এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন। আনাজ বাজারে মাছ-মাংস বিক্রি বন্ধের অনুরোধ জানাননি। সেখানে দু’দিনই বিক্রি হয়েছে। অন্ডাল উত্তর বাজারে এক জন মাংস ও এক জন মাছের দোকানদার বিরোধিতা করে দোকান খোলা রেখেছেন।
স্থানীয় রামপ্রসাদপুর পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের চন্দ্রভানু দত্ত দাবি করেন, দক্ষিণ বাজারে প্রতি বছরই ছটের প্রথম দিন রাস্তার পাশে মাংসের দোকান বন্ধ থাকে। এ বারও তাই ছিল। নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করতে এক দিন আগে দোকান বন্ধ করার চেষ্টা করছিল বিজেপি। পায়ের তলার মাটি নেই, তা বুঝে গিয়েছে তারা। এ দিন তাঁদের যুব নেতৃত্ব উত্তর বাজারে দোকানদারের সঙ্গে দেখা করে নিশ্চিন্তে দোকান খোলা রাখার বার্তা দিয়েছেন, জানান তিনি।
সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক রবিন সরকারের অভিযোগ, ‘‘এ রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপি, দু’পক্ষই ধর্মকে হাতিয়ার করে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। আমরা সৌহার্দ্যের পরিবেশ নষ্ট হতে দেব না। তাই মিছিল ও প্রতিবাদ করে ইচ্ছুক দোকানদারের পাশে দাঁড়ানো হয়েছে।’’ ‘বাংলা পক্ষ’ সংগঠনের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক অক্ষয় বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘বাংলার খাদ্যাভ্যাসে মাছ-মাংস, নিরামিষ সবই আছে। যাঁর যেমন ইচ্ছা, তিনি তেমন খাবেন। এ বিষয়ে কারও হস্তক্ষেপ মানা হবে না।’’
বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোনও উৎসবে কে কী খাবেন, সেটা আমাদের দলের দেখার বিষয় নয়। অন্ডালে স্থানীয় পর্যায়ে কেউ যদি দলের নাম নিয়ে এমন ঘটিয়ে থাকেন, তা ঠিক করেননি।’’