আলোচনা, চিন্তা-ভাবনা চলছিলই। সোমবার বিকালে ১২টি রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা বা এসআইআর চালুর কথা ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে জেলা নির্বাচন আধিকারিকের দফতরে। জেলাশাসক আয়েষা রানি এ দফায় দফায় জেলা নির্বাচন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, বুথে বুথে ‘ভূতের দাপাদাপি’ নির্বাচন কমিশন বন্ধ করতে পারবে কি না, এটাই সামনের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বড় পরীক্ষা।
জেলা নির্বাচন দফতরের দাবি, কোনও যোগ্য, বৈধ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে না। তবে মৃত, স্থানান্তরিত বা অবৈধ ভোটারের নাম যাতে তালিকায় না থাকে, সেটা বিএলওদের নিশ্চিত করতে হবে। সূত্রের খবর, ম্যাপিংয়ে যাঁদের নাম পাওয়া যায়নি তাঁদের খোঁজে বিএলওরা যাবেন। সঙ্গে থাকবেন রাজনৈতিক দলগুলির বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ)। নির্দিষ্ট অ্যাপে তাঁদের নাম তোলা হবে। প্রতিটি ভোটারকে নির্দিষ্ট একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে। সেই ফর্ম নিয়ে বিএলওরা বাড়ি বাড়ি যাবেন। যাঁরা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন, তাঁরা অনলাইনে ওই ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে পারবেন।
যে ভোটারদের পড়তে বা লিখতে সমস্যা রয়েছে, তাঁদের সাহায্য করবেন বিএলওরা। এক জন ভোটদাতার বাড়িতে তিন বার করে যাওয়ার কথা। জেলার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, বিএলও-র সহযোগী হিসাবে বিএলএদের নাম ইআরও বা এসডিওর কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। কোনও বুথে বিএলএদের নাম বাকি থাকলে তা বৈঠকে দিয়ে দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের দাবি, রবিবার জেলা নির্বাচনী আধিকারিক বা জেলাশাসক আয়েষা রানি এ স্কুল শিক্ষা সংসদকে যে সব শিক্ষক বিএলওর নিয়োগের চিঠি নেননি তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এসআইআর ঘোষণার পরে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে কমিশন।
বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অভিজিৎ তায়ের দাবি, “এসআইআরের ফলে মৃত, ভুয়ো, অস্তিত্বহীন ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ যাবে। ছাপ্পা ভোট আর দেওয়া যাবে না।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, “আমরা মনে করি, স্বচ্ছ্ব ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে। মৃত ভোটারদের তালিকা জমা দিয়েছিলাম, কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। সেই কারণে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রকৃত বা বৈধ ভোটারের নাম তালিকা থেকে যেন বাদ না যায়। ন্যায্য ভোটার বাদ গেলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করা হবে। প্রয়োজনে ওই ভোটারকে আইনি সাহায্যও করবে দল।”